নরসিংদীর জনতা জুট মিল

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, অনিশ্চয়তায় ৭ হাজার শ্রমিক

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নরসিংদী

ছবি : সংগৃহীত

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় অবস্থিত জনতা জুট মিলস লিমিটেডে দুষ্কৃতকারীদের হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের জন্য মিলটি বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিক পক্ষ। গতকাল সকালে মিলের প্রধান ফটকে এ-সংক্রান্ত নোটিস টাঙিয়ে দেয়া হয়। পরে তা মাইকিংয়ের মাধ্যমে শ্রমিকদের জানানো হয়। 

মিলটিতে সাত হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিলেন, পুনরায় চালু করার সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না করায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বন্ধ ঘোষণার পর মিলের কলোনি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে সেখানে বসবাসরত হাজারো শ্রমিক পরিবার।

জনতা জুট মিলস লিমিটেডের পক্ষে জেনারেল ম্যানেজার মো. মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ‘জনতা জুট মিলস লিমিটেডে গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর মধ্যবর্তী বিভিন্ন সময়ে কিছুসংখ্যক দুষ্কৃতকারী প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বেআইনি ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং ভাংচুরে লিপ্ত আছেন।’

অফিস আদেশে বলা হয়, ‘এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১২ (১) অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সব উৎপাদন কার্যক্রম ৭ সেপ্টেম্বরের শিফট থেকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

এতে আরো বলা হয়, ‘বন্ধকালীন সময়ের দীর্ঘসূত্রতার প্রেক্ষিতে শ্রম আইন এবং শ্রম বিধিমালা মোতাবেক উপযুক্ত শ্রমিকগণ ধারা ১২(৬), ১২(৭) বা ১২(৮) অনুসারে মজুরি প্রাপ্য হবেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল শ্রমিককে জনতা জুট মিলস লিমিটেডের কর্মক্ষেত্রে যোগদান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ১৪ দফা দাবিতে পলাশ উপজেলার বাগপাড়া গ্রামে অবস্থিত আকিজ বশির গ্রুপের মালিকানাধীন জনতা জুট মিলস লিমিটেডে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের একাংশ। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ভবন, লেবার অফিস, নিরাপত্তা অফিস, গেস্ট হাউজসহ বিভিন্ন অফিস কক্ষে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। তাদের বাধা দিতে গিয়ে মিলের ছয়জন নিরাপত্তাকর্মী আহত হন। খবর পেয়ে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এদিকে মিলের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মিলের জেনারেল ম্যানেজার মো. মতিউর রহমান জানান, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে মিলটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন