রাজস্ব তথ্যের অমিল সমন্বয়ে সভা ডেকেছে এনবিআর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক আহরিত রাজস্বের সঙ্গে আইবাস++, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (সিজিএ) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজস্ব তথ্যের সমন্বয়বিষয়ক সভা আহ্বান করা হয়েছে। গত বুধবার এনবিআরের গবেষণা ও পরিসংখ্যান অনুবিভাগ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ২ সেপ্টেম্বর বেলা ৩টায় এনবিআর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এনবিআরের রাজস্ব আহরণ তথ্যের সঙ্গে আইবাস++, সিজিএ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজস্ব তথ্যের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়েছে। এতে নীতিনির্ধারণী তথ্য-উপাত্ত প্রস্তুতিতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সমন্বয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজস্ব তথ্যের সামঞ্জস্য বিধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সভাটি অনুষ্ঠিত হবে।

গত ৩০ জুলাই বণিক বার্তায় ‘রিজার্ভ-রফতানির পর রাজস্ব আয়ের হিসাবেও বড় অসংগতি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে এসেছে সরকারের রাজস্ব আহরণে। বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সরকারের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। পরে তা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এ লক্ষ্যের বিপরীতে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করছে এনবিআর।

সংস্থাটির হালনাগাদ এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ হয়েছে সংশোধিত লক্ষ্যের চেয়ে প্রায় ২৭ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা কম। আর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিজিএ) হিসাবে গত অর্থবছরে দেশে রাজস্ব আহরণ হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী এনবিআর ও সিজিএর রাজস্ব আহরণের তথ্যে পার্থক্য ৯৭ হাজার ২৮০ কোটি টাকার বেশি। উভয় হিসাবেই দেখা গেছে, রাজস্ব আহরণে গত অর্থবছরে সরকারি লক্ষ্যের মতো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বেঁধে দেয়া লক্ষ্যও পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

তখন এনবিআর থেকে কর অঞ্চল, ভ্যাট কমিশনারেট ও কাস্টম হাউজগুলোয় চিঠি পাঠানো হয় এ গরমিলের তথ্য খুঁজে বের করতে। এনবিআর থেকে তখন জানানো হয়, গরমিল রয়েছে কিনা সে বিষয়ে ৭ আগস্ট আনুষ্ঠানিক ব্রিফ করা হবে। তারপর ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সেটি আর সম্ভব হয়নি। 

১৪ আগস্ট এনবিআরের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান। ১৮ আগস্ট সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, ‘আমাদের ইমেজ সংকট আছে যে আমরা তথ্য ঠিকভাবে সংগ্রহ করতে পারি না। বাংলাদেশ ব্যাংক বা অডিট অধিদপ্তরের সঙ্গে আমাদের তথ্যে গরমিল দেখা যায়। এখন থেকে এ বৈষম্য দূর করা হবে। আইবাসের তথ্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখন থেকে সমন্বিত তথ্য পরিবেশন করা হবে। রাজস্ব আহরণের একটাই ফিগার হবে। সেটা হলো আইবাস ফিগার।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন