গাজায় স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৬

বণিক বার্তা ডেস্ক

সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে গাজার স্কুলগুলো ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে। ওই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিল বাস্তুহারা লোকজন। গতকাল এক বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে অবস্থিত আল জাউনি স্কুলে ইসরায়েলি বাহিনীর ওই হামলায় ৭৫ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের ওই ভবনটিতে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) বলেছে, তারা ‘আল-জাউনি স্কুল এলাকায় অবস্থিত ওই অবকাঠামোয় বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে’ লক্ষ্যবস্তু করেছে।

এদিকে ক্যাম্পের একটি বাড়িতে পৃথক বিমান হামলায় আরো ১০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নুসেইরাত স্কুলে হামলার একটি ভিডিওতে ধ্বংসস্তূপ ও ধোঁয়ায় ঢাকা রাস্তায় প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের চিৎকার করতে দেখা যায়।

এক এক্স পোস্টে দেয়া বিবৃতিতে স্কুল ভবনে হামলার কথা স্বীকার করে আইডিএফ বলছে, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে তারা ‘অনেক’ পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে ‘আকাশ থেকে সুনির্দিষ্ট নজরদারি’ এবং ‘বাড়তি গোয়েন্দা তৎপরতা’ রয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী বলছে, হামাস যোদ্ধারা ওই স্থানটিতে ‘লুকিয়ে’ থেকে আইডিএফ সেনাদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছিল। অন্যদিকে হামাস এ হামলাকে ‘বাস্তুচ্যুত অসহায় বেসামরিক মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ’ বলে বর্ণনা করেছে।

গত আট মাসের যুদ্ধে ঘরহারা ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষের আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে অনেক স্কুল এবং জাতিসংঘের স্থাপনা ব্যবহার হয়ে আসছে। গত জুনে নুসেইরাতে জাতিসংঘ পরিচালিত আরেকটি স্কুলে হামলার ঘটনায় অন্তত ৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। হামলার পর ইসরায়েলির সামরিক বাহিনীর তরফে বলা হয়েছিল, ওই স্কুলে ‘হামাসের একটি অবস্থানে’ সুনির্দিষ্ট আঘাত হানা হয়েছে এবং সেখানে থাকা ‘২০-৩০ যোদ্ধার’ অনেকেই মারা গেছে।

এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে গত কয়েক দিনে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চুক্তির বিষয়ে অগ্রগতির খবর মিলছে।

ইসরায়েল বলেছে, জিম্মি মুক্তির প্রশ্নে হামাসের সঙ্গে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে তারা মধ্যস্থতাকারী দল পাঠাবে।

হামাসের শীর্ষ এক নেতা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‌ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির প্রশ্নে আলোচনায় বসতে তারা সম্মত হয়েছে। আমরা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছি। মধ্যস্থতাকারীরা এখন দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করবেন।’ 

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ভূখণ্ডে হামাসের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে ২৫১ জনকে জিম্মি করে হামাস। পাল্টা জবাবে গাজায় যে অভিযান ইসরায়েল চালিয়ে আসছে, তাতে ৩৮ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। খবর বিবিসি ও আল জাজিরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন