বাগেরহাটে ভাঙা সড়কে ব্যাহত যোগাযোগ ব্যবস্থা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বাগেরহাট

বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বাগেরহাটে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়কের বেশির ভাগ কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথাও কোথাও ইটের সোলিং ভেঙে সমতলের সঙ্গে মিশে গেছে। আবার কোথাও গ্রামীণ সড়কের অস্থিত্বই বিলীন হয়ে গেছে। এক মাস হতে চললেও সড়ক সংস্কার করা হয়নি। ভাঙা সড়কের কারণে যোগযোগ ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেন উপকূলের বাসিন্দারা। ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামো দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় জানানো হয়েছে। ঝড়ের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সড়ক সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগেরহাট উপকূলের পাঁচ উপজেলা। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার সড়ক ও কাঠের পোল, কালভার্ড, সেতুসহ ১২০টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও বাগেরহাট সদরে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছে অনেকে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ বলেন, ‘জলোচ্ছ্বাসে সব রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। চলাচল করতে পারছি না। কাঠের পোলগুলো ভেঙে গেছে। সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। রাস্তাঘাট মেরামত না করলে কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না।’

এ ব্যাপারে মোরেলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মনিরুল হক তালুকদার বলেন, ‘জলোচ্ছ্বাসে কিছু সড়ক ভেঙে সমতলে মিশে গেছে। গ্রামীণ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া জলোচ্ছ্বাসে লোকালয়ে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করায় সুপেয় পানির উৎসগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে। পুকুর, ডোবা ও খাল-বিলের পানি কালচে আকার ধারণ করেছে। রান্না, গোসলসহ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ডায়রিয়া ও চর্মরোগসহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে উপকূলবাসী।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুজ্জামান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে এলজিইডির সড়কসহ বিভিন্ন অবকাঠমোর ক্ষতি নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জেলার প্রায় ৪০০ কিলোমিটার সড়ক ও কাঠের পোল, কালভার্ট, সেতুসহ ১২০টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ খালিদ হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে জেলায় ৬৪৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় বিষয়টি জানানো হয়েছে। ঝড়ের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন