বাজেট প্রতিক্রিয়া

ডিজিটালে কর বসিয়ে প্রতিবন্ধকতায় স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন কষ্টসাধ্য হবে

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

ছবি : বণিক বার্তা

সামগ্রিক অর্থনীতির টানাপড়েন ও ভঙ্গুরতার মধ্যে থেকেই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে দেখতে হবে। বাজেট মূল্যায়ন করতে গেলে আমাদের অর্থনীতিতে বিদ্যমান সংকটগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। আমাদের অর্থনীতির চলমান সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে অব্যাহত মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক রিজার্ভের পতন, রাজস্ব সংগ্রহে স্বল্পতা, রফতানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহে স্থবিরতা, পুঁজি পাচার, ব্যাংক খাতে বিশৃঙ্খলা, সর্বব্যাপী দুর্নীতি, সরকারি ব্যয়ে অনিয়ম, অপচয় ও জবাবদিহিতার অভাব। এছাড়া রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশী ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি। এ পরিস্থিতির সীমাবদ্ধতার মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটকে একই সঙ্গে বলা যায় বাস্তবসম্মত, আবার অন্যভাবে বলা যায় যূপকাষ্ঠে বলির পশুর মতো হাত-পা বাঁধা, তার বেশি কিছু করার নেই।

সংকটগুলো মাথায় রেখে এ মুহূর্তে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে সংকোচনমূলক বাজেটের বিকল্প নেই। আমাদের রাজস্ব-জিডিপির অনুপাত উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে অন্যতম নিম্নহার। আমাদের মতো দেশের বাজেটের যে ন্যূনতম আকার দরকার সেটা তৈরি করার সুযোগ নেই। আবার মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যহীনতা যদি বিবেচনায় রাখতে হয় তাহলে ঘাটতিও সীমিত রাখতে হবে। এতে সামাজিক সুরক্ষা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে উন্নয়ন ব্যয় সংকুলান করা কঠিন। তার ওপর আছে ভর্তুকির বোঝা। বিশেষ করে বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে বড় অংকের বোঝা বহন করতে হচ্ছে। আরেকটা উদ্বেগের বিষয়, বাজেট ঘাটতির বড় অংশই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মেটাতে হবে। বর্তমান অবস্থায় নতুন টাকা ছাপিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া বিপজ্জনক। ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার ফলে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ সংকুচিত হবে। এবারের বাজেটে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ। এর মধ্যে যদি আবার খেলাপি ঋণ ক্রমাগত বেড়ে যায় তাহলে নতুন করে ঋণ দেয়ারও তো সুযোগ থাকে না। নতুন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা কোথায় ঋণ পাবেন? এ অবস্থায় বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সেটাকে অনেকে যে অবাস্তব মনে করেন তাতে যুক্তি আছে। এমন পরিস্থিতিতে আপাতদৃষ্টে একটা ন্যূনতম মানানসই বাজেট দিতে হলে কিছু জোড়াতালি, অসংগতি বা অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা তো থাকবেই। কারণ অর্থনীতি যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে বাজেট ব্যবস্থাপনার যেকোনো বিকল্পই সুখকর হবে না। এটা মেনে নেয়াই ভালো। 

সমস্যা হলো, প্রস্তাবিত বাজেটে যদি শুধু সাময়িক অর্থনৈতিক টানাপড়েনের প্রতিফলন হতো তাহলে কথা ছিল না। অনেক দিন ধরেই আমাদের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মৌলিক কিছু দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে। যার ফলে শুধু বাজেটের আয়-ব্যয়ের হিসাব মিলিয়ে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। প্রয়োজন সার্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার বড় ধরনের গুণগত পরিবর্তন। কিন্তু সরকারের উচ্চতম মহলে সেই উদ্যোগ আছে কিনা, নাকি বাজেট প্রস্তাবনায় কিছু গা ছাড়া গোছের আপ্তবাক্য আওড়ানো হয়েছে সেটা বাজেট বাস্তবায়নের বিভিন্ন ধাপে প্রকাশ হবে। 

আমরা এখন যে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে আমরা কীভাবে পৌঁছলাম? বিশ্ব অর্থনীতির একাধিক বিপর্যয় থেকে সমস্যার সূত্রপাত হয়েছিল—এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই, কিন্তু শুধু সেটাই কারণ হলে সাময়িক সংকট থেকে উত্তরণ সহজ হতো। আমাদের আসলে আগে থেকেই ব্যবস্থাপনার জায়গা থেকে মৌলিক কিছু সমস্যা পুঞ্জীভূত ছিল। অতি নিম্ন রাজস্ব সংগ্রহের হার আমাদের অর্থনীতির একটি বড় দুর্বলতা হওয়া সত্ত্বেও তা সমাধানে আমরা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিইনি। কার্যকর সংস্কারে এতদিন অবহেলা করেছি। দেশী-বিদেশী উৎস থেকে ক্রমাগত ঋণ নিয়ে ঘাটতি বাজেট মেটাতে গিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন ঋণের অর্ধেকের সমপরিমাণ ব্যয় হবে শুধু এরই মধ্যে নেয়া ঋণের সুদ পরিশোধে। এটা ভবিষ্যতে ঋণের ফাঁদে পড়ার অশনিসংকেত।

ব্যাংক খাতে বিশৃঙ্খলা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। অর্থনীতির সবচেয়ে সংবেদনশীল খাতটি এখন প্রায় নিয়ন্ত্রণহীন ও অরক্ষিত অবস্থায় আছে। প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে বিনিয়োগের পরিবেশও তৈরি হয়নি। প্রশাসনের সর্বস্তরে জবাবদিহিতার অভাব, অনিয়ম ও দুর্নীতির ফলে সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ের বদলে ব্যাপক অপচয় হয়েছে। অর্থনীতিতে আস্থার পরিবেশ তৈরি হয়নি। আর্থিক লেনদেনের ওপর নজরদারি প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। যে কারণে অর্থনীতিতে অবাধে কালো টাকার সঞ্চালন ও পুঁজি পাচার হচ্ছে। ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা জমা ও ওঠানো হচ্ছে। সম্প্রতি খবর প্রকাশিত হলো, সাবেক আইজিপি ব্যাংকে প্রচুর টাকা জমা ও উত্তোলন করেছেন। ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী, টাকা জমা ও উত্তোলন লিখিতভাবে করতে হয়। আর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) ব্যাংকগুলো ১০ লাখ টাকার বেশি জমা উত্তোলন করলে ধরে পড়ে। তাহলে এ টাকার উৎস ও গন্তব্য কোথায়? আমরা এ টাকাগুলোর দিকে ভ্রূক্ষেপ করতে পারছি না কেন? 

মূল্যস্ফীতি এমন একটি বিষয়, সময়মতো সঠিক পদক্ষেপের অভাবে এটি আমাদের ওপর গেড়ে বসে। মূল্য প্রত্যাশা তৈরি হয়। সবাই যদি মনে করে দাম বাড়বে, তাহলে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতেই থাকেন। নতুন ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় মূল্যস্ফীতি কমাতে প্রয়োজন বিশ্বাসযোগ্য নীতি। যে নীতির প্রতি আস্থা থাকবে—এটি মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনবে। তাহলে আর মূল্য প্রত্যাশা থাকে না। 

যতদিন অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক ছিল, রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রফতানি বাণিজ্য চাঙ্গা ছিল এবং একই সঙ্গে প্রবৃদ্ধিও জোরালো ছিল তত দিন এসব অনিয়ম, অব্যবস্থা ও অপচয়ের বোঝা অনেকটা চাপা পড়েছিল। এত দিন সেই সমস্যা হজম করার শক্তিও অর্থনীতির ছিল। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই বলে এসব সমস্যা বেরিয়ে আসছে। এসব সংকট মোকাবেলায় দৃঢ় ও মধ্যমেয়াদি পথনির্দেশনার প্রয়োজন আছে। এখন যে পথে অর্থনীতি চলছে, সেই পথের পরিবর্তন না হলে ঈপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়।

বেসরকারি খাতের মন্দা সমাধানে বৈদেশিক বিনিয়োগ সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারত। কিন্তু আমরা বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে পারিনি। যেমন ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক সূচকগুলো প্রায় একই রকম ছিল, বিশেষ করে বৈদেশিক বিনিয়োগ। অথচ এখন বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) বছরে বড়জোর ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ। যেখানে ভিয়েতনামে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ। এমনকি মাথাপিছু আয়েও তারা এগিয়ে। সম্প্রতি ভিয়েতনাম একটি কমিউনিস্ট দেশ হয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেছে। যে প্রযুক্তি মালয়েশিয়া ও ভারত চাচ্ছে, ওই চুক্তির ফলে সে প্রযুক্তি ভিয়েতনাম পাচ্ছে। এটা অর্থনৈতিক কূটনৈতিক দক্ষতার মাধ্যমেই সম্ভব। 

আমরা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিদেশ থেকে ঋণ নিচ্ছি। কিন্তু বিদেশে থেকে ঋণ না নিয়ে যদি মূলধন ও ইকুইটি পার্টিসিপেশন আকৃষ্ট করতে পারতাম তাহলে আমাদের বাজেটে ঋণের বোঝা বাড়ত না। লক্ষ করার বিষয় যে আমাদের বাজেটে ব্যয় সংকোচন করতে কিছু মেগা প্রকল্পের বরাদ্দ কমানো হয়েছে। যদিও রূপপুর প্রকল্পে বাজেট বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো থেকে বলা হয়েছে—প্রকল্প শেষের পথে, তাই বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। আবার বাড়তি ব্যয় কমানোর কথা বলা হয়েছে। এখানে প্রশ্ন হলো, বাড়তি ব্যয় ছিল কেন? আর এখন কমানো হলো কেন? এর মধ্যে আবার কম বরাদ্দ দিয়ে বেশকিছু মেগা প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। উন্নয়নের জন্য এ ধরনের মেগা প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে। তবে এগুলোর সমীক্ষাভিত্তিক মূল্যায়ন, অগ্রাধিকার নির্ণয়, অর্থায়নের শর্ত, ব্যয়ের সাশ্রয় এবং ভবিষ্যতে ঋণ পরিশোধের দায়—এসব নিয়ে প্রশ্ন আছে। আমি মনে করি, এ নিয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সুযোগ আছে।

দেশের অব্যাহত মূল্যস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দুই বছরের জন্য যে করের হার নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এটাকে সুবিবেচনাপ্রসূত মনে হয় না। কারণ এখন মূল্যস্ফীতি আছে। আগামী বছরও এটি কমবে বলে মনে হয় না। 

আয়করের তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে ভ্যাটের মতো পরোক্ষ কর আদায় অনেক সহজ উপায়। কিন্তু পরোক্ষ কর তো সাধারণ মানুষের ওপর গিয়ে পড়ে। বাঘ যেমন দুর্বল হরিণকে শিকারের জন্য বেছে নেয়, এটিও সে ধরনের করনীতি। কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর কর কমানো হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় সাধারণের জীবন মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বেশি হবে। জ্বালানি, বিদ্যুতে এসবের বাড়তি খরচের নেতিবাচক প্রভাব জীবনধারণে আরো বেশি পড়ে। একটি লক্ষণীয় বিষয়, মোবাইলে ফোনের ইন্টারনেট ব্যবহারে আগে থেকেই ভ্যাট ছিল ও ভ্যাটের ওপর সম্পূরক কর ছিল। কিন্তু সেই সম্পূরক করও এবার আরো বাড়ানো হলো। কারণ কর সংগ্রহের এটি একটি সহজ উপায়। বর্তমানে প্রায় ১০-১২ কোটি মানুষ মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এদের মধ্যে সাধারণ মানুষও আছে। বর্তমানে বাংলাদেশ তো ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছে। এখন ডিজিটালেই যদি কর বসিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়, তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন কষ্টসাধ্য হবে। আর এর মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়বে কিনা সেটাও তো স্পষ্ট নয়। তাছাড়া বাড়তি খরচের ফলে ইন্টারনেট সেবার ব্যবহার কমে গেলে রাজস্ব আয় কতদূর বাড়ে বা আদৌ বাড়বে কিনা তার জন্য তো সমীক্ষার প্রয়োজন। যারা সঠিক সম্পদের হিসাব দেন, তাদের ক্ষেত্রে সারচার্জসহ এ হার আরো বেশি হবে।

আয়করের উচ্চতম হার বাড়িয়েছে ৩০ শতাংশ। তখন যে যুক্তিতে এ হার কমানো হয়েছিল সেই যুক্তিটি বোধহয় আমরা ভুলে গেছি। সেই যুক্তিতে বলা হয়েছিল, যেখানে উচ্চবিত্ত করদাতাদের সিংহভাগ আয়ের সঠিক হিসাব দেন না, সেখানে কিছু সৎ করদাতা, হোক না তারা উচ্চবিত্তের। তাদের ওপর উচ্চ কর চাপিয়ে দিলে তারাও কিন্তু আর সৎ থাকবেন না। কাজেই আমাদের অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। উচ্চতর মানুষের ওপর উচ্চতর করহার একটি জনপ্রিয় বিষয়, তাই এটিকে সবাই সমর্থন করে। কিন্তু বিষয়টি ন্যায্যতা বা কর ফাঁকির দিক থেকে বিবেচনা করা দরকার। পাশাপাশি প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত আয় ১৫ শতাংশ হারে কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে বৈধ করার সুবিধা দেয়া হয়েছে। এটাকে অনেকেই অন্যায্য ও অনৈতিক বলেছেন। তবে আমি মনে করি, দেশের অর্থনীতিতে অনৈতিকতার বিষয়টি আরো ব্যাপক পরিসরে আলোচনা করা দরকার। ক্রমেই নৈতিকতাহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে দেশ। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছি। সেটা প্রযুক্তিগতভাবে একটি ভালো দিক। কিন্তু স্মার্ট মানুষ যখন নীতিহীন হন তারা তখন ভয়ংকর রূপ ধারণ করে, সেটাও মনে রাখা দরকার। কাজেই আমাদের অর্থনীতিতে নৈতিকতা কীভাবে ফিরিয়ে আনা হবে, সেটা ভাবা দরকার। যেমন দুর্নীতি সব দেশেই আছে। আজকে বাংলাদেশকে যে কারণে অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ধরা হয়, তার একটি কারণ হলো নাগরিকরা সরকারি যেকোনো সেবা নিতে গেলেই দুর্নীতির শিকার হন।

দুর্নীতি ও অনিয়মের সবচেয়ে বড় উৎস হলো আমাদের দেশের ক্ষমতার রাজনীতির ধরন। যার মূল ভিত্তি হলো, বিভিন্ন অনুগত স্বার্থগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যায় সুযোগ-সুবিধার বিতরণ। এর ফলে সম্পদের অসম বণ্টন বাড়ে, অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে, বিনিয়োগের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সৎ উদ্যোক্তারা বঞ্চিত হন। অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে এবং টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে ক্ষমতার রাজনীতির মধ্যে থেকেও অন্তত কিছু সংবেদনশীল খাতকে এসব প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা যায় কিনা সেটা বিবেচনা করা জরুরি। অর্থনৈতিক উন্নয়নে সফল অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা তা-ই বলে। 

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ: অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা

[নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) ও সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত অর্থনীতির চালচিত্র ও প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৪-২৫ শীর্ষক অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় ]

শ্রুতলিখন: সাবিদিন ইব্রাহিম ও সাবরিনা স্বর্ণা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন