বাজারে আসার আগেই ফ্লোরিডা ও আলাবামায় নিষিদ্ধ ল্যাবে তৈরি মাংস

বণিক বার্তা ডেস্ক

নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে কোম্পানিগুলো ছবি: এপি

যুক্তরাষ্ট্রের মুদি দোকান বা রেস্তোরাঁয় এখনো চালু হয়নি ল্যাবে তৈরি মাংসের সরবরাহ। এ বিষয়ে গবেষণা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, সীমিতভাবে কিছু ব্যবহারের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, কিছু আইনপ্রণেতা যেদিকে এগোচ্ছেন, তাতে কখনই বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারবে না এ খাদ্যপণ্য। খবর এপি।

গত মাসের শুরুতে ফ্লোরিডা ও আলাবামা দুই অঙ্গরাজ্যই পশুর কোষ ব্যবহার করে গবেষণাগারে উৎপাদিত মাংস ও সামুদ্রিক খাবার বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। বিদ্যালয়ে ল্যাবে তৈরি মাংস কেনা নিষিদ্ধ করে একটি বিলেও স্বাক্ষর করেছেন আইওয়ার গভর্নর। ফেডারেল আইনপ্রণেতারাও চাইছেন, আইনিভাবে কৃত্রিম মাংসের সরবরাহ সীমিত করা হোক।

তবে আইনপ্রণেতাদের এ প্রচেষ্টা কতদূর বাস্তবায়ন হবে এখনো তা স্পষ্ট নয়। এরই মধ্যে কিছু মাংস কোম্পানি জানিয়েছে, এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন তারা। এছাড়া টেনেসির আইনপ্রণেতারা বলেছেন, ভোক্তাদের পছন্দকে সীমাবদ্ধ করবে বলে প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞায় তাদের অনুমোদন নেই।

এ ধরনের দোদুল্যমান পরিস্থিতি সত্ত্বেও মার্কিন কোম্পানিগুলো আশা করছে, বছরখানেকের মধ্যে ল্যাবে তৈরি মাংস বাজারে পাওয়া যাবে।

গত বছরের জুনে প্রথমবার ক্যালিফোর্নিয়ার স্টার্টআপ গুড মিট ও আপসাইড ফুডসকে এ ধরনের মুরগির মাংস বিক্রি করার অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু আইনপ্রণেতাদের বিরোধিতা ল্যাবে তৈরি মাংসের সম্ভাবনাকে অনেকটাই স্তিমিত করছে। রাজ্য আইনসভার ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহযোগী পরিচালক কিম টেরেল জানান, সাতটি অঙ্গরাজ্যে এমন আইন প্রবর্তন হয়েছে, যা কৃত্রিম মাংস নিষিদ্ধ করবে।

মনটানার ডেমোক্রেটিক সিনেটর জন টেস্টার ও সাউথ ডাকোটার রিপাবলিকান মাইক রাউন্ডস জানুয়ারিতে মার্কিন সিনেটে বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবারে ল্যাবে তৈরি মাংসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল উত্থাপন করেছিলেন।

এ প্রতিক্রিয়া শুধু যুক্তরাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ নয়। গত বছরের শেষের দিকে ল্যাবে তৈরি মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল ইতালি। ফরাসি আইনপ্রণেতারাও নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল উত্থাপন করেছেন।

তবে ল্যাব তৈরি মাংস ও সামুদ্রিক খাবার সাধারণ ভোক্তাদের কাছে পৌঁছতে এখনো অনেকটা দূরে আছে। কারণ সেগুলো তৈরি খুব ব্যয়বহুল। জীবন্ত প্রাণী, নিষিক্ত ডিম বা স্টোরেজ ব্যাংকের কোষ ব্যবহার করে পণ্যগুলো ইস্পাত ট্যাংকে জন্মানো হয়। এ কোষগুলোকে পানি, চিনি, চর্বি ও ভিটামিনের বিশেষ মিশ্রণে খাওয়ানো হয়। বড় হয়ে গেলে মাংসের টুকরোগুলো কাটলেট, নাগেট ও অন্যান্য রূপ দেয়া হয়।

খরচ কমাতে কোম্পানিগুলোকে ব্যাপক আকারে মাংস উৎপাদন করতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা তাতে বাধা দেবে। তাই এরই মধ্যে কোম্পানিগুলো প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। সম্প্রতি আপসাইড ফুডস চেঞ্জ ডট অর্গে পিটিশন চালু করেছে। সেখানে ভোক্তাদের উদ্দেশে বলা হচ্ছে, ‘আপনার প্লেটে পুলিশিং বন্ধ করতে রাজনীতিবিদদের মানা করুন’।

এ বিষয়ে গুড মিটের গ্লোবাল মার্কেটিং প্রধান টম রসমেইসল বলেন, ‘এটি লজ্জাজনক যে আমরা গেট থেকে বের হওয়ার আগেই তারা দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে।’ আইনি পদক্ষেপ ছাড়া এর কোনো বিকল্প দেখছেন না বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে, নিষেধাজ্ঞার সমর্থকদের বক্তব্য কৃষক ও ভোক্তাদের রক্ষা করতে চান তারা। এছাড়া এ ধরনের খাদ্যের নিরাপত্তা নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন