বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং

কোথায় পড়বেন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং

ফিচার প্রতিবেদক

ছবি: বিএমই বিভাগ, বুয়েট

বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বর্তমান সময়ের অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন একটি বিষয়। দেশে-বিদেশে চাকরির বাজারে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি ২৫ হাজার রোগীর জন্য ১ অথবা প্রতিটি ১০০ শয্যার হাসপাতালের জন্য একজন  বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার প্রয়োজন। তবে বাংলাদেশের মাত্র ২ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয় পড়ানো হয়। বাংলাদেশে মেডিকেল ফিজিকস শিক্ষার প্রথম কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পদার্থবিদ্যা বিভাগে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২০০০ সালে গণ বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের কোর্সসহ একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল ফিজিকস এবং বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৫ সাল থেকে মেডিকেল ফিজিকস এবং বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি (অনার্স) কোর্স চালু করা হয়। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ২০০৭ সালে এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েটে) ২০১৬ থেকে পড়ানো শুরু হয়। এখন দেশের বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়ে এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি বায়োমেডিকেল ফিজিকস অ্যান্ড টেকনোলজি নামে পড়ানো হয়। 

শুরুর দিকে বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রতি বছর ৩০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেতেন। কভিড-১৯ মহামারীকালে চাহিদা বিবেচনায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেলে আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ করা হয় এবং পোস্টগ্র্যাজুয়েট লেভেল ৩০। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পোস্টগ্র্যাজুয়েট লেভেলে প্রতি বছর ১০ জন শিক্ষার্থী সুযোগ পান। এছাড়া চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুয়েট, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলিজ (এমআইএসটি), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যাস্ট), গণ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশকিছু সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে প্রায় ১৮০টির মতো আসন রয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এটি গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সটি বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে এটি পড়ানো হয়। ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে শিগগিরই চালু করা হবে বলে জানা গেছে।  

এসএসসি, এইচএসসিতে ন্যূনতম জিপিএ ৩.০০সহ সর্বমোট ৮.০০ থাকলে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যায়। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে এটি বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগ হিসেবে চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি দেয়া হয়। এখানে ভর্তিতে এসএসসি ও এইচএসসিতে মোট জিপিএ ৫.০০ তবে দুটিতেই ন্যূনতম ২.৫ বা এসএসসি ও এইচএসসিতে ন্যূনতম জিপিএ ২.০০ সহ সম্মিলিতভাবে মোট জিপিএ ৬.০০ হলে এ বিভাগে ভর্তি হওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও মেধাবীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা আছে। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল ফিজিকস এবং বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি (অনার্স) ভর্তি হতে এসএসসি ও এইচএসসিতে ন্যূনতম জিপিএ ২.৫ এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ক্ষেত্রে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে গণিত ও পদার্থবিদ্যা বা ইলেকট্রিক্যাল/ ইলেকট্রনিকস/ রেডিওলজিক্যাল সায়েন্স/ মেকানিক্যাল/ ইলেকট্রো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং দ্বিতীয় শ্রেণী বা সমমান থাকতে হয়।

বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে রেডিওথেরাপি বিভাগ নিউক্লিয়ার মেডিসিন সেন্টার, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, জাতীয় ও বহুজাতিক মেডিকেল ইনস্ট্রুমেন্টেশন কোম্পানি, বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ইনস্টিটিউট বা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, বিদেশে মেডিকেল ফিজিসিস্ট হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করে বেশির ভাগ স্নাতক বিদেশেই ক্যারিয়ার গড়ে থাকেন। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন