ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী

ঢাকাবাসীকে সুন্দর জীবন উপহার দিতে কাজ করছে সরকার

বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বঙ্গবাজারে চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে বলেন, ‘‌ঢাকাবাসী যাতে সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ এলাকার, বিশেষ করে পুরান ঢাকার মানুষ উপকৃত হবে এবং তারা সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবে। এ প্রকল্পগুলো নতুনভাবে বাঁচার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে।’

প্রকল্পগুলো হচ্ছে বঙ্গবাজারে ‘বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতান’, পোস্তগোলা সেতু থেকে রায়েরবাজার জলকপাট পর্যন্ত আট সারির ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি সরণি’, ধানমন্ডি লেকে ‘নজরুলসরোবর’ এবং শাহবাগে ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান’ আধুনিকীকরণ কাজ।

বঙ্গবাজারে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান, ‌বর্ধিত ঢাকার জনগণ যেন যথাযথ সেবা পেতে পারে সেজন্য নগরীকে তিনি উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন দুটি অংশে ভাগ করেন। যেগুলো ইউনিয়ন ছিল, সেগুলোকেও সিটি করপোরেশনের আওতায় নিয়ে এসে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঠিকানাবিহীন পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের আবাসন সমস্যা দূরীকরণে সরকার ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, পুরান ঢাকার সঙ্গে তার একটা আলাদা নাড়ির টান রয়েছে। কাজেই এ অঞ্চলের মানুষ ভালো থাকুক, সেটাই তার লক্ষ্য।

অতীত স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, ‘‌জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হন, তখন তার পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন।’ ঢাকায় এসে প্রথমে তারা ৮/৩ রজনী বোস লেনের একটি বাড়িতে ওঠেন। এরপর বঙ্গবন্ধু মন্ত্রী হলে মিন্টো রোডে চলে আসেন। ৯২-এর ক ধারায় জরুরি আইন জারি করা হলে ১৪ দিনের নোটিসে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয় এবং বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন। ৭৯ নম্বর নাজিরাবাজারে অবিভক্ত ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ফুপুর বাড়িতে দীর্ঘদিন ছিলেন। মাঝে বন্যা হলে আরমানিটোলার বাঘওয়ালা বাড়িতেও ছিলেন। শেখ রেহানার জন্ম ঢাকার মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আর শেখ রাসেলের জন্ম ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি একটি প্রাইমারি স্কুল ছিল। পরে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল এবং সেখান থেকে কলেজ হয়। আর এখন বিশ্ববিদ্যালয়। এতটুকু জায়গা, বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো-ছিটানো হোস্টেল। এগুলো সব একত্র করে একটি ভালো ক্যাম্পাস ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত করে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের আবাসস্থল নির্মাণ করে শিক্ষার জন্য আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে জায়গা ও নকশা করা হয়ে গেছে। কাজও শিগগির শুরু হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেভাবে নতুন ক্যাম্পাস আমরা করে দেব যাতে একটা সুস্থ পরিবেশে ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারে।’

বঙ্গবাজার পুনর্নির্মাণের পর ব্যবসা চালু রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন