আশ্বাস নয়, কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চায় ফিলিস্তিনিরা

বণিক বার্তা ডেস্ক

রাফায় অভিযান বন্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের পরই হামলা চালায় ইসরায়েল ছবি: এপি

‘পুরো বিশ্ব কী বলছে তাতে কোনো গুরুত্ব দেয় না ইসরায়েল। আচরণ দেখে মনে হয় তারা সব আইনের ঊর্ধ্বে। যার একমাত্র কারণ তাদের মদদ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র’—বলছিলেন ইসরায়েলি হামলায় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি তরুণ সাবান আবদেল রউফ। রয়টার্সকে তিনি বলছিলেন, ‘আমরা যেভাবে প্রতিনিয়ত ইসরায়েলি গণহত্যার শিকার হচ্ছি বিশ্ব তা ঠেকাতে প্রস্তুত নয়।’ গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ বিষয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের (আইসিজে) রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কথাগুলো বলছিলেন তিনি। 

যদিও আইসিজের রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার ইসরায়েলি মন্ত্রীরা এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ সময় জিম্মিদের মুক্তি এবং হামাসকে পরাজিত করার লক্ষ্যে দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন তারা। আদালতের আদেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাফায় বোমা হামলা চালায় ইসরায়েল। এদিকে ইসরায়েলি সেনা ও হামাসের সশস্ত্র শাখার মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে।

আইসিজের রায়ে খুব একটা আশাবাদী নয় ফিলিস্তিনি নাগরিকরা। দেইর আল বালাহ আশ্রয় শিবিরে অবস্থানরত সালবা আল মাসরি বলছিলেন, ‘‌তারা (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) বারবার শুধু একই কথা বলে যাচ্ছে, যেটার আসলে প্রয়োজন নেই। তারা কথা বলেই যাবে আর ইসরায়েলি গণহত্যা চলতেই থাকবে। আমরা চাই তারা যা বলে সেটার বাস্তবায়ন।’

রাফায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবি নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের দ্বারস্থ হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে দাবি করে দেশটি সেখানে হামলা বন্ধ করতে আবেদন জানায়।

ওই মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনের রাফায় দখলদার ইসরায়েলের চলমান হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আইসিজে। শুধু তা-ই নয়, ইসরায়েলি সৈন্যদের ওই এলাকা ছেড়ে দেয়ার জন্যও বলা হয়েছে।

আইসিজের প্রধান বিচারপতি নওয়াফ সালাম বলেন, ‘‌রাফায় তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলের যেকোনো হামলা বন্ধ করতে হবে। যে হামলায় গাজার ফিলিস্তিনি ও তাদের অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’

রাফায় মানবিক পরিস্থিতি বিপর্যয়কর মন্তব্য করে তিনি যত দ্রুত সম্ভব সেখানে ইসরায়েলি সৈন্যদের হামলা বন্ধ করার নির্দেশ দেন।

এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। তারা বলেছে, গাজা উপত্যকায় তদন্তকারী দলকে তারা স্বাগত জানাবে। হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেছেন, ‘‌আইসিজের তদন্ত কমিটির সঙ্গে সহযোগিতায় হামাস অঙ্গীকারবদ্ধ।’

তবে আইসিজের নির্দেশে গাজায় চলমান সংঘাতের ধ্বংসযজ্ঞের পুরো স্বীকৃতি আসেনি বলে উল্লেখ করেছেন বাসেম নাইম। তিনি বলেছেন, ‘‌আমরা মনে করি এটি যথেষ্ট নয়। কারণ গাজা উপত্যকাজুড়ে, বিশেষ করে উত্তর গাজায় দখলদারদের আগ্রাসন একেবারে নৃশংস ও বিপজ্জনক।’

আইসিজের রায় মানতেই হবে—কোনো দেশেই এমন বাধ্যবাধকতা নেই, বিষয়টি স্মরণে রেখে রাফায় আশ্রয় নেয়া আরেক ফিলিস্তিনি নাবিল দিয়াব বলেন, ‘আমরা অতীতেও এমন অনেক ঘোষণা শুনেছি যেগুলো কেবল ঘোষণাই থেকে গেছে। তাই এখন আর সিদ্ধান্ত বা ঘোষণা নয়, আমরা বাস্তব পদক্ষেপ দেখতে চাই।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন