দ্বিতীয় ধাপে ১৫৭ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট আগামীকাল। এ ধাপেও প্রচার ঘিরে বিভিন্ন স্থানে সংঘাত, হুমকি, আচরণবিধি লঙ্ঘন, সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে। তাই ভোটের আগে গতকাল থেকেই মাঠে নেমেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (র্যাব) আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের আগে ও পরে মোট পাঁচদিন তারা দায়িত্ব পালন করবেন।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা (মিডিয়া) মো. শরীফুল ইসলাম গতকাল জানান, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে সারা দেশে ৪৫৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ারের আওতায় তারা ১৯-২৩ মে পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবেন।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের এবারের ধাপের প্রচার শেষ হয় গতকাল মধ্যরাতে। তাই শেষ সুযোগ কাজে লাগাতে সারা দিনই মাঠে ছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। তবে অনেকটা একতরফা এ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত ভোটারদের কতটা কেন্দ্রে আনা যাবে, তা নিয়েই সংশয়টা বেশি। কেননা ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনও বর্জন করেছে। ফলে ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল মাত্র ৩৬ শতাংশ।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এ বিষয়ে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা পাঁচদিনের জন্য মাঠে নিয়োজিত থাকবেন। এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে পরিপত্র জারি করেছে। পরিপত্র অনুযায়ী, সমতলে সাধারণ ভোট কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ১৭ সদস্য করে এবং গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮-১৯ জনের ফোর্স মোতায়েন থাকবে। দুর্গম ও পার্বত্য এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে ২০-২১ জন করে ফোর্স। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনে প্রতি উপজেলায় থাকবেন একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে, বিশেষ করে বিজিবির প্রতিটি মোবাইল টিমের সঙ্গে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।
নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে বিচারের জন্য প্রতি উপজেলায় থাকবেন একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। ভোট গ্রহণের পরের দুদিন অর্থাৎ ২৩ মে পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। সরকারি জরুরি সেবা ৯৯৯-এ থাকবে বিশেষ টিম। ওই টিম নির্বাচনসংক্রান্ত প্রাপ্ত অভিযোগ অথবা তথ্যের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরাসরি এলাকাভিত্তিক আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় সেলে প্রেরণ করবে। নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে গতকাল মধ্যরাত থেকেই ভোটের এলাকায় সীমিত করা হয়েছে যান চলাচল।