আসিয়ানের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ির বাজার এখন মালয়েশিয়া

বণিক বার্তা ডেস্ক

কুয়ালালামপুরে একটি ডিলারশিপে টয়োটা গাড়ির প্রদর্শনী ছবি: নিক্কেই এশিয়া

থাইল্যান্ডকে পেছনে ফেলে ইন্দোনেশিয়ার পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ির বাজারে পরিণত হয়েছে মালয়েশিয়া। এটি এশিয়ার অটোমেকারদের জন্য একটি বড় পরিবর্তন হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। গাড়ির বাজারে মালয়েশিয়ার বিক্রয় পরিসংখ্যান অনুসারে, মালয়েশিয়া চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকসহ টানা তিন প্রান্তিকে থাইল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে। নিক্কেই এশিয়ার থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের অটোমোটিভ শিল্প গ্রুপের প্রকাশিত গাড়ি বিক্রির পরিসংখ্যান নিয়ে এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

মালয়েশিয়ান অটোমোটিভ অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে মালয়েশিয়ায় গাড়ি বিক্রি ৫ শতাংশ বেড়ে ২ লাখ ২ হাজার ২৪৫টি ইউনিটে পৌঁছেছে। এছাড়া ২০২৩ সালে ১১ শতাংশ বেড়ে ৭ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩১টি গাড়ির ইউনিট বিক্রি হয়েছিল।

সরকারি অর্থনৈতিক উদ্দীপনা প্যাকেজের অংশ হিসেবে স্থানীয়ভাবে নির্মিত গাড়ির জন্য বিক্রয় করছাড় দেশীয় গাড়ির ব্র্যান্ড পেরোদুয়া ও প্রোটনকে বাজার সম্প্রসারণে সাহায্য করেছে। এ দুটি ব্র্যান্ড মালয়েশিয়ায় প্রায় ৬০ শতাংশ বাজার হিস্যা ধরে রেখেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, মালয়েশিয়ায় স্থানীয়ভাবে নির্মিত গাড়ির বিক্রয় করছাড় ২০২০ সালে শুরু হয়েছিল। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সেটা বন্ধ হয়ে গেলেও ২০২৩ সালে করমুক্ত গাড়ি বুকিংয়ের সুবিধা অব্যাহত ছিল। মালয়েশিয়ান অটোমোটিভ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বিদ্যুচ্চালিত গাড়িসহ অন্য অনেক নতুন মডেলের গাড়ি এ সময়ে উন্মোচন হয়েছে। এছাড়া প্রতিযোগিতামূলক দামের কারণে বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করেছে।

কুয়ালালামপুরের টয়োটা বিক্রয় এজেন্ট ইভান খু বলেন, ‘‌২০২৪ সালের প্রথম দুই মাসে বিক্রি প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ছিল। এ সময়ে টয়োটার সবচেয়ে জনপ্রিয় মডেল ছিল ভায়োস, কারণ এটির দাম ২১ হাজার ডলারের নিচে ছিল।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘‌টয়োটার ইন্টারনাল কম্বাশন ইঞ্জিন ও হাইব্রিড উভয় বিভাগের গাড়িগুলো আগামীতে এ বাজারে আরো ভালো ব্যবসা করবে।’

এদিকে থাইল্যান্ডে চলতি বছরের শুরুতে গাড়ি বিক্রি কমেছে। দেশটিতে অটোমোটিভ শিল্পের কেন্দ্রীকরণের কারণে গত বছরের তুলনায় প্রথম প্রান্তিকে বিক্রি ২৫ শতাংশ কমে এসেছে। এর আগ পর্যন্ত দীর্ঘদিন থাইল্যান্ড এশিয়ার গাড়ি বিক্রির বাজারে দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছিল। অনাদায়ী অটো ঋণ ও মন্থর ভোগ প্রবণতার কারণে থাইল্যান্ডের মাসিক গাড়ি বিক্রি গত জুন থেকে বছরওয়ারি হিসাবে কমে এসেছে। তবে চীনের গাড়ি নির্মাতাদের দেশটির বাজারে প্রবেশ করায় ইভির বাজার বেড়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ারও গাড়ির বাজারেও স্থবিরতা দেখা গেছে। সুদহার বেড়ে যাওয়ায় প্রথম প্রান্তিকে গাড়ি বিক্রি গত বছরের তুলনায় ২৪ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে প্রথম প্রান্তিকে ভিয়েতনামেরও গাড়ি বিক্রি কমেছে ১৬ শতাংশ। অর্থনৈতিক স্থবিরতা, রফতানি ও অন্যান্য কারণে গত বছর থেকে দেশটিতে বিক্রি কমেছে। তবে মূল্যস্ফীতির চাপ কমে আসায় ও শক্তিশালী ভোক্তা ব্যয় থাকায় ফিলিপাইনের প্রথম প্রান্তিকে গাড়ি বিক্রি ১৩ শতাংশ বেড়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অন্য দেশের গাড়ি নির্মাতারা মূলত মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে আকৃষ্ট করতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো প্রতিযোগিতা করেছে। ভর্তুকি ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এ অঞ্চলে গাড়ি বিক্রি বৃদ্ধির মূল কারণ হবে বলে তারা আশা করছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন