ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ফ্রান্স সম্প্রতি আয়োজন করেছে ‘চুজ ফ্রান্স’ ইভেন্ট। এ আয়োজনে দেশটিতে নিজেদের উপস্থিতি ও কার্যক্রম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের বেশকিছু বড় প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে মাইক্রোসফট, অ্যামাজন ও ফাইজার ১ হাজার ৫০০ কোটি ইউরো বা ১ হাজার ৬২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে। খবর দ্য ন্যাশনাল।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান ও মরগান স্ট্যানলিও ফ্রান্সে বিনিয়োগ করবে। ১৮০টি কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের নিয়ে ‘চুজ ফ্রান্স’ সম্মেলনের আয়োজন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতিতে ১ হাজার ৩০০ কোটি ইউরোর প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রতিশ্রুতি পেয়েছে ফ্রান্স। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান থেকে শুরু করে বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন খাতে ৫৬টি প্রকল্পের জন্য বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। মূল বক্তৃতায় বিষয়টি উল্লেখ করেন ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেন, ‘আপনাদের বিশ্বাস ও সিদ্ধান্তের জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এসব প্রকল্প বিনিয়োগের পাশাপাশি ফ্রান্সের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনবে।’
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ক্লাউড অবকাঠামোর উন্নয়নে ৪০০ কোটি ইউরো বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়ার মাধ্যমে তালিকার শীর্ষে রয়েছে মাইক্রোসফট। বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে কোম্পানিটি ফ্রান্সে ২০২৭ সাল নাগাদ ১০ লাখ লোককে প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা জানিয়েছে। এটি মার্কিন কোম্পানিটির সবশেষ বিনিয়োগ। অন্যদিকে ফ্রান্সের মিস্ট্রাল এআইয়ের বিকাশে চলতি বছর ১ হাজার ৫০০ কোটি ইউরোর একটি মাল্টি ইয়ার চুক্তি করেছে মাইক্রোসফট।
এপ্রিলে এআইয়ের বিকাশে আবুধাবির কোম্পানি জি ফোরটি টুএ ১৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগের চুক্তি করেছে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিটি। অন্যদিকে অ্যামাজনও অবকাঠামো ও কম্পিউটিং সক্ষমতার উন্নয়নে ১২০ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করবে বলে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ফাইজার ও সানোফি যথাক্রমে ৫০ ও ১০০ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করবে বলে জানা গেছে।
ইউরোপিয়ান ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে ফ্রান্সের রাজধানীতে বৈশ্বিক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের কথা ভাবছে মরগান স্ট্যানলি। দেশটির অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মাইরের বরাতে ব্লুমবার্গ এ কথা জানিয়েছে। এছাড়া ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংক ও নাইজেরিয়ার জেনিথ ব্যাংক প্যারিসে নিজেদের অফিস চালুর জন্য কাজ করছে। ফলে ফ্রান্সের কোম্পানিগুলো জিসিসি অঞ্চল ও আফ্রিকায় বিনিয়োগ করতে পারবে বলেও জানান মন্ত্রী।
২০২১ সালে প্যারিসে মরগানের কর্মী সংখ্যা ছিল ১৫০। বর্তমানে তা ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। প্যারিসের বিভিন্ন অংশে আরো ১০০ কর্মী নিয়োগের কথা ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি, যার মধ্যে গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রও রয়েছে। বৈশ্বিক পর্যায়ে বিভিন্ন কোম্পানি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগে যে ঘোষণা দিয়েছে তা ফ্রান্সে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা গত বছর ২৮টি প্রকল্পের মাধ্যমে আট হাজারের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।