মূল্যস্ফীতির প্রভাবে সংকটে জেন জি তরুণরা

বণিক বার্তা ডেস্ক

জেন জির মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ আগের প্রজন্মের তুলনায় বেশি ছবি: রয়টার্স

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাবে আগের প্রজন্মের তুলনায় জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে আছে জেনারেশন জি বা জেন জি। মূলত কম আয় ও মূল্যস্ফীতির চক্করে পড়ে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক ক্রেডিট রিপোর্টিং এজেন্সি ট্রান্সইউনিয়নের প্রকাশিত নতুন এক জরিপ অনুসারে, জেন জি তরুণদের আর্থিক সংগ্রাম মিলেনিয়াল প্রজন্মের একই বয়সের তুলনায় অনেকটা বেশি। খবর সিএনএন ও দ্য হিল।

১৯৯৭-২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেয়া প্রজন্মকে জেন জি বলা হয়, যাদের বর্তমান বয়স ১১-২২ বছরের মধ্যে। অন্যদিকে ১৯৮১-৯৬ সালের মধ্যে যাদের জন্ম তাদের মিলেনিয়াল বলা হয়। গবেষকরা জানান, দুই প্রজন্মই ক্যারিয়ারের শুরুতে অর্থনৈতিক সংকট দেখেছে। জেন জি তরুণদের সামনে ছিল কভিড-১৯ ও মিলেনিয়াল প্রজন্ম দেখেছে বৈশ্বিক মন্দা।

গত ফেব্রুয়ারিতে পরিচালিত ট্রান্সইউনিয়নের এ জরিপে অংশ নেন জেন জির ২০-২৪ বছর বয়সী ৬১৪ জন এবং ১০ বছর আগে ২০-২৪ বছরের কোটায় ছিলেন এমন ৬২৩ মিলেনিয়াল। জরিপে অংশ নেয়া জেন জির তথ্যে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের ক্রেডিট ব্যুরো ডাটার মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত ছিল। একইভাবে মিলেনিয়াল প্রজন্মের জন্য ২০১৩ সালের মূল্যায়ন বিশ্লেষণ করে দেখা হয়।

জরিপে দেখা যায়, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় মিলেনিয়ালদের তুলনায় জেনারেশন জির আয়ের পরিমাণ কম। সেই সঙ্গে ১০ বছর আগের ২২-২৪ বছর বয়সী তরুণদের তুলনায় এখনকার তরুণদের আয়ের অনুপাতে ঋণের পরিমাণও বেশি। 

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকের তথ্যানুসারে, এ সময় ২২-২৪ বছর বয়সীদের গড় উপার্জন ছিল ৪৫ হাজার ৪৯৩ ডলার।৷ অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করলে ২০১৩ সালের শেষ প্রান্তিকে ২২-২৪ বছর বয়সীরা গড়ে ৫১ হাজার ৮৫২ ডলার উপার্জন করতেন।

ঋণের তুলনায় আয়ের অনুপাতও ২০১৩ সাল থেকে বর্তমানে বেশি। ২০১৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যা এখন ১৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাবে জেনারেশন জির আর্থিক অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে বলে জরিপে বলা হয়েছে। সেখানে আরো বলা হয়, বর্তমানে ২২-২৪ বছর বয়সীদের গড় ক্রেডিট কার্ড ব্যালেন্স ২ হাজার ৮৩৪ ডলার। ১০ বছর আগে এটি ছিল ২ হাজার ২৪৮ ডলার। 

আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দুই প্রজন্ম কতটা আত্মবিশ্বাসী বা মানসিক চাপ অনুভব করছে, তাও অন্তর্ভুক্ত ছিল জরিপে। এতে ১৪ শতাংশ জেন জি বলেছেন, তারা অত্যন্ত চাপের মধ্যে আছেন। ১০ বছর আগের পরিপ্রেক্ষিতে একই প্রশ্ন মিলেনিয়ালদের করা হলে ৮ শতাংশ উত্তরদাতা জানান, ওই সময়ে তারাও অর্থনৈতিকভাবে সংগ্রাম করছিলেন।

জেন জির ৮ শতাংশ তরুণ জানান, নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে তারা অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী। মিলেনিয়ালদের ক্ষেত্রে এ হার ছিল আরো বেশি, ১৩ শতাংশ।

ট্রান্সইউনিয়নের গ্লোবাল রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটিং বিভাগের প্রধান চার্লি ওয়াইজ বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে জেন জি তরুণদের জীবনযাত্রা বাবদ বেশি অর্থ খরচ হচ্ছে। বিভিন্ন খাতে ভাড়া তাদের জন্য বড় একটি সমস্যা। কয়েক বছর ধরে ভাড়ায় পাওয়া যায় এমন সব জিনিসের জন্য দ্বিগুণ খরচ করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে খাবার থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ বিল, গ্যাস ও পরিবহনের খরচও বেড়ে গেছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন