এশিয়ায় খাদ্যপণ্য রফতানি নিয়ে অসন্তুষ্ট ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : সংগৃহীত

এশিয়ার প্রধান কিছু খাদ্য ও পানীয় প্রদর্শনীতে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের পণ্য নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন দর্শকরা। এতে দেশটির খাদ্য রফতানিকারকদের মনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া এ অঞ্চলে বিক্রি প্রবৃদ্ধিও প্রত্যাশার তুলনায় কম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্রেক্সিটের পর লাভজনক নতুন বাজারে প্রবেশ সহজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও এখন উল্টোটা দেখা যাচ্ছে। খবর বিবিসি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাজ্যের পিছিয়ে পড়ার কারণও রয়েছে। খাদ্যপণ্য বিক্রি ও খ্যাতির দিক থেকে দেশটির তুলনায় প্রধান ইউরোপীয় প্রতিপক্ষরা এগিয়ে রয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগও যথেষ্ট নয়। 

সিঙ্গাপুরের এক ইভেন্টে সম্প্রতি এক থাই নারী বলেন, ‘‌ব্রিটিশ খাবার মূলত কী, তা নিয়ে আমি আসলে নিশ্চিত নই। এটা কি সসেজ জাতীয় কিছু?’ একজন মালয়েশিয়ান বলেন, ‘এতে আলাদা কিছু নেই।’ ২০২৩ সালে ইতালি বিশ্বব্যাপী ৬ হাজার ৯১০ কোটি ডলার মূল্যের খাদ্য ও পানীয় রফতানি করেছিল। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য রফতানি করেছিল ৩ হাজার ৫০ কোটি ডলার। জিডিপি অনুসারে, খাদ্য ও পানীয় রফতানিতে যুক্তরাজ্যের তুলনায় ইতালির হিস্যা তিন গুণ বেশি।

বর্তমানে এশিয়ায় ৪৪০ কোটি ডলারের খাদ্য ও পানীয় রফতানি করে যুক্তরাজ্য, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি। কিন্তু একই সময়ে ইতালির রফতানি ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৬৬০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। 

দেশীয় খাবার বিদেশে ছড়িয়ে দিতে সরকারের সহায়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন সিঙ্গাপুর ও ব্রুনাইয়ে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত দান্তে ব্র্যান্ডি। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য ইইউ রাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা একটি বড় সুবিধা উপভোগ করি, তা হলো এশিয়ার অনেক দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি।’ 

যুক্তরাজ্য সরকারের ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এ বাজারের অনুসরণ। গত বছর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপে (সিপিটিপিপি) স্বাক্ষর করেছে দেশটি। এ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে ১১টি দেশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ইতালির জন্য এশিয়া একটি লাভজনক বাজার। যার কারণে এখানে আয়োজিত প্রধান সব ইভেন্টে নিজেদের খাবার উপস্থাপন ও কূটনৈতিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতালির রাষ্ট্রদূত দান্তে ব্র্যান্ডি বলেন, ‘এসব বাণিজ্য প্রদর্শনী সরকারি কার্যকলাপের অংশ। সামগ্রিক এ প্রক্রিয়াকে আমরা সিস্টেমা ইতালিয়া বলি।’

বেশির ভাগ ব্রিটিশ খাদ্য রফতানিকারক বিশ্বব্যাপী খাদ্যবাজারে নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন। তাদের অনেকেই অভিযোগ করে জানান, বাজার পরিস্থিতি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সরকার যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সিঙ্গাপুরে যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি দল নিজেদের পকেট থেকে অর্থ খরচ করার কারণে ইভেন্টে যোগ দিতে পেরেছেন বলে জানান।

ফুড অ্যান্ড ড্রিংক এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কারেন বেস্টন বলেছেন, ‘২০২৯ সাল থেকে আমরা এ ধরনের প্রদর্শনীতে আসার জন্য সরকারি কোনো অর্থ সাহায্য পাইনি।’

আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণে যুক্তরাজ্য সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বলে গত বছর জানিয়েছিলেন দেশটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী কেমি বাডেনোচ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন