ফরিদপুর টেপাখোলা রিসোর্ট প্রকল্প

কাটা পড়বে সোহরাওয়ার্দী সরোবরের পুরনো ৩১ গাছ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ফরিদপুর

লেকের পূর্ব ও দক্ষিণ পাড়ের গাছগুলোর বেশির ভাগই মেহগনি ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ফরিদপুরের সোহরাওয়ার্দী সরোবর তথা টেপাখোলা লেকপাড়ে ১৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে রিসোর্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা পরিষদের জায়গায় ফরিদপুর টেপাখোলা রিসোর্ট নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে কেটে ফেলা হবে সেখানকার পুরনো ৩১টি গাছ। এরই মধ্যে গাছগুলো কেটে ফেলার টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে সেগুলোর গায়ে খোদাই করে চিহ্ন দিয়ে দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে পরিবেশবাদীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। গাছগুলো রেখেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব বলেও মনে করেন তারা। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গাছ রেখে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ৩১টি গাছ কাটা হলেও পাশাপাশি হাজার ৭৬২টি গাছ রোপণ করা হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নভেম্বর একনেকের বৈঠকে ২১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ফরিদপুর টেপাখোলা রিসোর্ট প্রকল্পটি পাস হয়। নকশা অনুযায়ী রিসোর্টে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, টেপাখোলা রিসোর্ট স্কুল ব্লক, জিমনেসিয়াম, মসজিদ, রিসোর্ট সেন্টার, ভিকটোরি মিউজিয়াম, ভিকটোরি কমপ্লেক্স, ওয়ান্ডার হুইল, ফুড কোড, সিনিয়র সিটিজেন কর্নার, আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট সেন্টার, চিল্ড্রেন ওয়াটার গেইম, চিল্ড্রেন সুইমিংপুল, টেপা ক্যাফে হল, অ্যাম্পিথিয়েটার, বোর্ট ল্যান্ডিং ক্যাফে বঙ্গবন্ধু ইনডেক্স ফিঙ্গার টাওয়ার তৈরির কথা। তবে পরে বঙ্গবন্ধু ইনডেক্স ফিঙ্গার টাওয়ারটি বাদ দিয়ে প্রকল্পের বরাদ্দ ১৮০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। টেপাখোলা লেকটি ১৪ একর জমির ওপর অবস্থিত। লেকসহ আশপাশে সব মিলিয়ে ১৮ একর জমির ওপর লেকের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ সৌন্দর্যবর্ধনের প্রকল্প নিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০২৬ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছে প্রকল্প পরিচালক।

ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বাকাহীদ হোসেন বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন গাছগুলি রক্ষা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এগুলো রেখে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আমাদের জানানো হয়। ৩১টি গাছ কাটা হলেও পাশাপাশি হাজার ৭৬২টি গাছ রোপণ করা হবে। সরকারি উদ্যোগে একটি দৃষ্টিনন্দন কাজ হবে। কাজের স্বার্থে আপাতত ক্ষতি আমাদের মেনে নিতে হচ্ছে।

ফরিদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘গাছগুলো রাস্তার পাশে এবং লেকের পাড়ে অবস্থিত। আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা উন্নয়নের বিরোধী নই। তবে আমার মনে হয়েছে গাছগুলো রক্ষা করে প্রকল্পের কাজ করা সম্ভব। গাছগুলো কেটে ফেলার উদ্যোগের কোনো যুক্তিসংগত কারণ দেখছি না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন