দুই পর্দায়ই স্বচ্ছন্দ খায়রুল বাসার

ছবি: খায়রুল বাসার

ব্যস্ত সময় পার করছেন তরুণ অভিনেতা খায়রুল বাসার। ছোট ও বড় পর্দায় সমানভাবে দক্ষতা দেখিয়ে চলেছেন। সর্বশেষ ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া ভিন্ন স্বাদের চলচ্চিত্র ‘কাজলরেখা’য় তার অনবদ্য অভিনয় উচ্ছ্বসিত করেছে ভক্তদের। বর্তমানের ব্যস্ততা ও সামনের পরিকল্পনা নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন এ গুণী অভিনেতা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাকেরা তাসনিম ইরা

কোথায় আছেন? কেমন আছেন?

খুব ভালো আছি। অস্ট্রেলিয়ায় আছি।

অস্ট্রেলিয়ায় কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া, নাকি ছুটি কাটাতে?

ছুটি কাজ দুটোই। রথ দেখা, কলা বেচা দুটোই। এখানে আমার সঙ্গে আমার সহ-অভিনেত্রী তটিনী, পরিচালক রুবেল হ্যানসন, ডিওপি কামরুল ইসলাম শুভও আছেন। একটি প্রজেক্টের শুটিংয়ের কাজ চলছে।

মূকাভিনয় দিয়ে শুরু হয়েছিল আপনার, নিয়ে কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে কি?

এটা নিয়ে আলাদা করে ভাবা হয়নি এখনো। তবে আমার মূকাভিনয়ের শুরুটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশন দিয়ে। সংগঠনটির সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন ছিলাম, এখনো আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। আমি বিশ্বাস করি, এখান থেকেই ভালো ভালো মূকাভিনেতা তৈরি হবে। চর্চার মাধ্যমে সংগঠন এরই মধ্যে একটা ভালো অবস্থানে আছে। আমার বিশ্বাস এটি আরো ভালো অবস্থানে যাবে। সেই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশন ভবিষ্যতে মূকাভিনয়ের জন্য একটি ভালো প্লাটফর্ম হবে।

কাজলরেখায় কাজ করার অভিজ্ঞতা জানতে চাই।

আমি গিয়াস উদ্দীন সেলিমের সঙ্গে কাজ করতে খুবই আগ্রহী ছিলাম। কাজ করার অভিজ্ঞতা যদি বলি, উনার সঙ্গে কাজ করা আনন্দের, ভালো লাগার। তাই উনার কাছ থেকে কাজের প্রস্তাব যখন পেলাম এবং যখন শুনলাম কাজটা কাজলরেখা, তখন রাজি হয়ে যাই। কাজলরেখায় আমার যে চরিত্র, সিনেমার ক্ষেত্রে আমি ধরনের চরিত্র করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি আপাতত। রকম ভিন্ন ধরনের গল্প তো আসলে সচরাচর হয় না। মৈমনসিংহ গীতিকা থেকে একটা সিনেমা হচ্ছে, আবার কবে হবে-না হবে তা তো বলা যায় না। তাও আবার এটাই প্রথম। ভবিষ্যতে যদি মৈমনসিংহ গীতিকার অন্য কোনো গল্প থেকেও সিনেমা তৈরি হয়, তখন এটাও রেফারেন্স হিসেবে দেখতে হবে। এসব কারণেই মনে হয়েছিল, কাজলরেখার অংশ হতে পারাটা আমার জন্য ভালো হবে। সেই সঙ্গে চরিত্রটি ঠিকঠাকভাবে ফুটিয়ে তোলাটাও আমার জন্য চ্যালেঞ্জের ছিল। গিয়াস উদ্দীন সেলিমের সঙ্গে প্রথমবার কাজ করাটাও চ্যালেঞ্জিং ছিল। পরিচালক যেভাবে বলেছেন, আমি সেভাবেই চরিত্র উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি।

কাজলরেখায় সাড়া কেমন পাচ্ছেন?

আমি ঈদের পর পরই শুটিংয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়া চলে এসেছি। তবে আমি নিজে হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখেছি। আমার মনে হয়, সবার সিনেমাটা দেখা উচিত। এটা দেখে এক ধরনের স্বস্তি লাগবে দর্শকের। সিনেমা কেউ না দেখাটা, একটা ভালো সিনেমা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা হবে।

ছোট পর্দা নাকি বড় পর্দা, কোনটা বেশি উপভোগ করেন?

আমি দুটোই উপভোগ করি। আমি মূলত অভিনয়টাকে উপভোগ করি। তবে ছোট পর্দা বড় পর্দায় অভিনয়ের ধরন ভিন্ন হয়। ছোট পর্দায় একটা গল্পকে ৪৫ মিনিটে বলা হয়, শুটিং হয় দুই-তিনদিনের। তাই ছোট পর্দায় অভিনয়ের ব্যাপ্তিটা যেমন থাকে, বড় পর্দায় সে রকম থাকে না। বড় পর্দায় যেহেতু গল্পটাও দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় বলা হয়, সেহেতু সেখানে অভিনয়ের ব্যাপ্তিটাও বেশি হয়। অভিনয়ের প্রস্তুতিটাও বেশি থাকে। তাই অভিনয়ের ধরনেও ভিন্নতা আসে। অর্থাৎ ছোট পর্দা বড় পর্দা দুটো দুই রকম। আমি দুটোকেই আলাদাভাবে উপভোগ করি।

ঈদুল আজহার জন্য কী কী কাজ করছেন?

দেশে ফিরে এলে ঈদের কাজ শুরু করব। আবার অস্ট্রেলিয়ায় চলমান শুটিং থেকেও দুই-একটা কাজ ঈদুল আজহায় আসবে। দেশে ফেরার পর ঈদের আগে নাটকের ব্যস্ততাটাই বেশি থাকবে। অনেকগুলো কাজই করার কথা। কাজের বেশ চাপ আছে। এক মাসে যে কয়টা কাজ করা সম্ভব সে কয়টা কাজই করা হবে।

নতুন কী সিনেমা আমরা পেতে যাচ্ছি?

ঈদের পর একটা সিনেমার কাজ শুরু হওয়ার কথা। এছাড়া সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্রসাড়ে তিন হাত ভূমি প্রথম অংশের কাজ শেষ হয়েছে। পরের অংশের কাজও শিগগিরই শুরু হবে। সেই সঙ্গে সময়-সুযোগ মিললে আরো একটি সিনেমায় বছর কাজ করা হবে বলে আশা করছি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় মাঝেমধ্যে আপনাকে আবৃত্তি গান করতে শোনা যায়, গান বা আবৃত্তি নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করার ইচ্ছা আছে?

গান বা আবৃত্তি নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আমার নেই। আমি অবসরে কবিতা পড়ি। সেখান থেকে কোনো কবিতা খুব ভালো লেগে গেলে রেকর্ড করি। তারপর মনে হয়, রেকর্ড করেছি যেহেতু ফেসবুকে শেয়ার করি। এটা আমার কাছে অবসরের একটা অনুষঙ্গ। আমার আশপাশের অনেকেই বলে, কবিতা একটা বোরিং ব্যাপার। কিন্তু কভিডের সময় যখন আমি প্রথমবার কবিতা আবৃত্তি করে ফেসবুকে আপলোড করি, তখন দেখি অনেকেই কবিতা পছন্দ করে। সবাই আমার আবৃত্তির প্রশংসাও করেছিল। আমি মাঝেমধ্যেই কবিতা আবৃত্তি করে আপলোড করব বলে ঠিক করেছি। কারণ কেউ যখন একটা কবিতা শোনে, সে নিশ্চয় সেটা নিয়ে ভাবে। কবিতাটা নিশ্চয় তাকে প্রভাবিত করে। খুব নিয়মিত যে এটা করব তাও হয়তো না, তবে করব।

অস্ট্রেলিয়া থেকে কবে ফিরবেন?

ফিরব আগামী মাসের তারিখ। এখানে একটা লম্বা জার্নি। কাজ শেষে একটু ঘোরাঘুরি করার পরিকল্পনা আছে তারপর দেশে ফিরব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন