চট্টগ্রামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

ছবি : বণিক বার্তা

চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় বেসরকারি হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেবা বন্ধ রেখেছে চিকিৎসকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীরা। স্থবির হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামে বেসরকারি খাতের চিকিৎসাসেবা। তবে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় রোগীর চাপ বেড়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ সরকারি হাসপাতালগুলোয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসংলগ্ন এলাকা ঘিরে চট্টগ্রামের বেশীর ভাগ বেসরকারি হাসপাতালের অবস্থান। বেসরকারি এসব হাসপাতালে  ব্যানার টাঙিয়ে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন রোগী বা পরীক্ষা করাতে আসা মানুষদের ফিরিয়ে দেয়া হলেও ভর্তি থাকা রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। রিপোর্টও ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে। এছাড়া দিনের বেলায় যেসব ডাক্তার বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখতেন তারাও চেম্বার বন্ধ রেখেছেন।

ফটিকছড়ি থেকে স্ত্রীর জন্য চিকিৎসাসেবা নিতে আসা শরীফ উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পরশু রাতে আমার স্ত্রীকে ডাক্তার দেখালে রক্তসহ বেশ কিছু পরীক্ষা করাতে দেন। গতকাল আসতে পারিনি। আজ এখানে আসার পরে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে জানানো হয় সকল প্রকার টেস্ট নাকি বন্ধ। আগামীকাল নাকি চালু হবে।’

এপিক হেলথ কেয়ারের ম্যানেজার হামিদ হোসেন আজাদ বলেন, ‘দুই  চিকিৎসকের ওপর হামলায়  জড়িতদের শাস্তির দাবিতে এ কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। বিএমএর কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আমাদের সেবা বন্ধ আছে। কর্মসূচি শেষ হলে সেবা পুনরায় চালু হবে।’

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীর চাপ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেড়েছে।  রোগীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক জানান, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চালু বা বন্ধ থাকুক, চট্টগ্রাম মেডিকেলের চিকিৎসা নিয়মানুযায়ী চলছে। তবে আজ সকাল থেকে রোগীর চাপ অনান্য দিনের থেকে বেশী। মেডিকেলের জরুরি বিভাগে দুপুরে যত মানুষ চিকিৎসা নেয়ার লাইন দাঁড়িয়েছিলেন,  অন্য সময় এমনটা দেখা যায় না। 

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাদের সহকর্মীকে মারধরের ঘটনায় কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আগামীকাল বুধবার ভোর পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। তবে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসাসেবা স্বাভাবিক আছে।

গত ১১ এপ্রিল পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রক্তিম দাশকে হাসপাতালে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এক রোগীকে চিকিৎসা দিতে দেরি হওয়ার অভিযোগে তাকে মারধর করে রোগীর স্বজনরা। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্যদিকে ১৪ এপ্রিল নগরীর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগে হামলার শিকার হন হাসপাতালটির চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিন শিবলু। বর্তমানে এ চিকিৎসক চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন