মার্চে এশিয়ায় জ্বালানি তেল আমদানি পৌঁছতে পারে ১০ মাসের সর্বোচ্চে

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: রয়টার্স

চলতি মার্চে এশিয়ার দেশগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি বেড়ে ১০ মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছতে পারে। মূলত চীন ও ভারত রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে কম দামের জ্বালানি তেল কেনায় এশিয়ার আমদানি ফুলেফেঁপে উঠছে বলে জানায় বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান এলএসইজি রিসার্চ।

এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। চলতি মাসে এ অঞ্চলে আমদানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে দৈনিক ২ কোটি ৭৪ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেলে, ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল দৈনিক ২ কোটি ৬৭ লাখ ব্যারেল আর জানুয়ারিতে দৈনিক ২ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল। এলএসইজি অয়েল রিসার্চ এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে।

সংস্থাটির দেয়া তথ্য বলছে, মার্চে সরবরাহের উদ্দেশ্যে বেশির ভাগ জ্বালানি তেলই সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির আগে রফতানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে ফিউচার মার্কেটে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারে নেমে যায়, যা ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিক পর্যন্ত এমন নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় ছিল। নিম্নমুখী দামে সুবিধা নিতেই এশিয়ার ক্রেতারা আমদানি বাড়িয়েছেন।

এশিয়ায় জ্বালানিটির আমদানি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করেছে চীন। দেশটি বিশ্বের শীর্ষ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিকারক। এলএসইজির পূর্বাভাস অনুযায়ী, মার্চে দেশটির আমদানি দৈনিক ১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হতে পারে, ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল দৈনিক ১ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল এবং জানুয়ারিতে ছিল ১ কোটি ৪ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল।

চীনের জ্বালানি তেল পরিশোধনাগারগুলোয় চলতি মাসের এ সময় রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে। শেষ হবে জুনের শেষ দিকে। ফলে দৈনিক প্রায় আট লাখ ব্যারেল উৎপাদন সক্ষমতা বন্ধ থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে যাতে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ সংকুচিত না হয়, সেজন্য পরিশোধনাগারগুলো আগে থেকে পরিপূর্ণ করে রাখছে। এ কারণেই মূলত দেশটিতে আমদানিতে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে।

এদিকে ব্যাপক চাহিদা মেটাতে আমদানি বাড়িয়েছে ভারত। দেশটিতে চলতি মাসে আমদানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে দৈনিক ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে, ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল দৈনিক ৪৫ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল এবং জানুয়ারিতে ছিল ৫০ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল।

রক্ষণাবেক্ষণের সময়জুড়েই চীন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে আমদানি বৃদ্ধির বিষয়টি অর্থনৈতিক উত্থান-পতনের ওপরও অনেক বেশি নির্ভর করছে।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) চীন যে পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে তার বেশির ভাগই কেনা হয়েছে যখন দাম নিম্নমুখী ছিল তখন। এলএসইজির তথ্যমতে, গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে এসব জ্বালানি তেল কেনে দেশটি।

গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর বিশ্ববাজারে ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭২ ডলার ২৯ সেন্টে নেমে গিয়েছিল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত বাজার আদর্শটির দাম একটু একটু করে বেড়ে ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৮৬ ডলারে এসে ঠেকেছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম যে হারে বেড়েছে সে হারে বাড়েনি পরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারদর। এতে এশিয়া পরিশোধনাগারগুলোর মুনাফা মার্জিন কমেছে। হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যবসা পরিচালনায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন