বিক্রি কমেছে ৩৩ শতাংশ

অ্যাপল কি চীনের বাজার হারাচ্ছে

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: এপি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বিরোধ শুরুর পর উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয় হুয়াওয়ের। এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে চীনে আইফোন বাজারজাত শুরু করে অ্যাপল। এরপর থেকে দেশটির বাজারে শীর্ষ অবস্থানে ছিল মার্কিন এ প্রযুুক্তি জায়ান্টটি। সম্প্রতি মেট সিক্সটি সিরিজ বাজারজাতের মাধ্যমে নতুন করে অ্যাপলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে হুয়াওয়ে। যার প্রভাব পড়েছে আইফোন বিক্রিতে।

টেকটাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইফোন বিক্রি কমেছে ৩৩ শতাংশ। এ নিয়ে টানা দুই মাস চীনের বাজারে অ্যাপলের বিক্রি নিম্নমুখী রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কুপারটিনোর প্রযুক্তি জায়ান্ট কি চীনের বাজারে এর অবস্থান হারাচ্ছে।

চীনের স্মার্টফোন বাজার এখন সংকোচনের মধ্যে রয়েছে। এরই মধ্যে অ্যাপলের বিক্রি কমার তথ্য প্রকাশ্যে এল, ফেব্রুয়ারিতে যা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কম। বাজার বিশ্লেষকদের মধ্যে বিক্রি কমে যাওয়ার পেছনে বেশকিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে লুনার নিউ ইয়ারের সময় পরিবর্তন এবং চীনের স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ার মতো বিষয় রয়েছে।

জানুয়ারিতেও অ্যাপলের বিক্রি নিম্নমুখী ছিল। সে সময় কোম্পানির বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৩৯ শতাংশ বা ৫৫ লাখ ইউনিট কমেছিল। ক্রমেই বিক্রি কমে যাওয়ায় প্রযুক্তিবিদরা বিশ্বের অন্যতম বাজারে কোম্পানির সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন। চীনে বিক্রি বাড়ানোর জন্য অ্যাপল বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে মূল্যছাড়ও রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন অফার দিয়েও চীনের বাজারে কোম্পানির হিস্যা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে এ প্রযুক্তি জায়ান্ট। বিশ্লেষকদের মতে, সামনের মাসগুলোয় অ্যাপলকে আরো কঠিন সময় পার করতে হবে। সে সময় বিক্রি আরো কমবে।

ইটি টেলিকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, আইফোনের প্রতি চীনের অধিবাসীদের আগ্রহ কমে আসছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় সপ্তাহ চীনে নতুন স্মার্টফোন কেনার উপযুক্ত সময় হলেও আইফোনের বিক্রি ২৪ শতাংশ কমেছে বলে কাউন্টারপয়েন্ট সূত্রে জানা গেছে। এর বিপরীতে হুয়াওয়ের বিক্রি বেড়েছে ৬৪ শতাংশ।

বিশ্লেষকরা জানান, ফেব্রুয়ারিতে সাড়ে ৩ হাজার ডলার মূল্যের ভার্চুয়াল রিয়ালিটি হেডসেট এখনো সেভাবে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে পারেনি। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান টেকইনসাইটসের সিনিয়র পরিচালক লিন্ডা সুই বলেন, ‘চীনে অ্যাপলের যে স্বর্ণযুগ ছিল সেটি শেষ হয়ে গেছে।’ লিন্ডা জানান, ভূ-রাজনৈতিক এ সংঘাত নিরসন করা না হলে অ্যাপলের পক্ষে আবার শীর্ষে উঠে আসা সম্ভব না।

ক্যানালিসের বিশ্লেষক লুকাস ঝং বলেন, ‘পাঁচ বছর আগেও চীনের বাজারে অ্যাপলের আলাদা পরিচয় ছিল। পণ্য উন্মোচনের আগে গ্রাহকরা অ্যাপল স্টোরের সামনে সারা রাত অপেক্ষা করেছে।’ বর্তমানে আইফোন ১৫ সহজে কেনার সুবিধা দিতে সাংহাইসহ চীনের বিভিন্ন শহরে পোস্টারিং করছে কুপারটিনোর প্রযুক্তি জায়ান্ট।

চীনে বর্তমানে স্মার্টফোন কিনা রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। আইফোন ব্যবহার চীনা কোম্পানির জন্য অসম্মানজনক কিনা কিংবা ব্যক্তিগত তথ্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে অনলাইনে তর্ক-বিতর্ক চলছে। এর অংশ হিসেবে গত বছর চীনের বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় কর্মস্থলে আইফোন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন