![](https://bonikbarta.net/uploads/news_image/news_372777_1.jpg?t=1722038732)
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উপসাগরীয় অঞ্চলে জ্বালানি তেল-বহির্ভূত খাতের সম্প্রসারণের গতি বেড়েছে। এতে সামনের সারিতে রয়েছে আবাসন খাত। সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), সৌদি আরব ও কুয়েতের মতো বড় অর্থনীতির দেশগুলো এরই মধ্যে আবাসন খাতসংক্রান্ত নীতিতে একাধিক সংস্কার এনেছে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিতে বিদেশীদের অংশগ্রহণ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। সম্প্রতি এক সিরিজ গবেষণায় দেখা যায়, আবাসন খাতের প্রবৃদ্ধি এ অঞ্চলের দেশগুলোয় ২০২৪ সালেও অব্যাহত থাকবে। খবর আরব নিউজ।
কুয়েতি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান কুয়েত ফাইন্যান্সিয়াল সেন্টার (মারকাজ) সম্প্রতি ইউএই, কুয়েত, সৌদি আরবের রিয়েল এস্টেট বাজারের ওপর ধারাবাহিক এ গবেষণা প্রকাশ করে।
মারকাজের গবেষণা থেকে জানা যায়, গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জেসিসি) অঞ্চলের আবাসন খাত স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত। এর পেছনে রয়েছে জ্বালানি তেলের স্থিতিশীল দাম, আবাসনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সহায়ক সরকারি নীতি। মূল্যস্ফীতি ও সুদহারের প্রভাবের মতো সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জকেও এ সমীক্ষায় বিবেচনায় আনা হয়। তা সত্ত্বেও আবাসন খাতে অব্যাহত সম্প্রসারণ আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মারকাজ নিজেদের রিয়েল এস্টেট ম্যাক্রো ইনডেক্সের মাধ্যমে পূর্বাভাসটি তৈরি করেছে। এতে ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইউএই, সৌদি আরব ও কুয়েতের স্কোর যথাক্রমে ৩ দশমিক ৮, ৩ দশমিক ৫৫ ও ২ দশমিক ৯ শতাংশ। যার সঙ্গে ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের স্কোরের তুলনা করা হয়। এটি যথাক্রমে ৩ দশমিক ৮, ৩ দশমিক ৫৫ ও ২ দশমিক ৮ শতাংশ।
উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে নীতি সংস্কার, বিদেশী বিনিয়োগসহ একাধিক ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ইউএই। মারকাজের প্রতিবেদনে দেশটির জন্য টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এর সহায়ক হিসেবে আরো আছে জ্বালানি তেলের উচ্চতর জিডিপি। আইএমএফের পূর্বাভাস অনুসারে, আরব আমিরাতে চলতি বছর প্রকৃত জিডিপি হতে পারে ৪ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২৪ সালে গড় মূল্যস্ফীতি হতে পারে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ভোক্তা ব্যয় ও বন্ধকি চাহিদাকে প্রভাবিত করতে পারে উচ্চ সুদহার। বৈশ্বিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোজোনে মৃদুমন্দার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও ক্রমবর্ধমান জ্বালানি তেল উত্তোলন ও বিস্তৃত জ্বালানি তেল-বহির্ভূত খাতের সমর্থনে ইউএইর অর্থনীতি স্থির গতিতে বাড়বে।
এদিকে সৌদি আরবের আবাসন খাত সম্পর্কে বলছে, জ্বালানি তেল ও জ্বালানি তেল-বহির্ভূত উভয় ক্ষেত্রেই শক্তিশালী কার্যক্রম দেখা যেতে পারে চলতি বছরে। মারকাজ বলছে, প্রাথমিকভাবে জ্বালানি তেল ও জ্বালানি তেল-বহির্ভূত খাতে সৌদি আরবের শক্তিশালী কার্যক্ষমতা আশা করা হচ্ছে। দেশটির প্রকৃত জিডিপি বছরওয়ারি ৪ শতাংশ বাড়তে পারে।
অবশ্য আবাসন খাতের লেনদেনের হ্রাস হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। তবে জমির দাম বৃদ্ধি ও অফিস খাতে অব্যাহত চাহিদা ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। ২০২৩ সালের মধ্যে অফিস খাতে শক্তিশালী প্রবণতা দেখা গেছে। বহুজাতিক সংস্থাগুলোর আঞ্চলিক সদর দপ্তর স্থাপনের পরিকল্পনা এ বছরও অব্যাহত থাকবে।
কুয়েতের আবাসন খাত সম্পর্কে বলা হচ্ছে, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে দেশটিতে একটি স্থিতিশীল বাজারের প্রত্যাশা করা যাচ্ছে। এ পূর্বাভাসের পেছনে রয়েছে শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অনুমান ও জ্বালানি তেলের দামে স্থিতিশীলতা।
১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত মারকাজ মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ও বিনিয়োগ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর এসব অঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মূল্যায়ন তৈরি করে।