ফেনীর ফাজিলপুর ওয়ালিয়া ফাজিল মাদ্রাসা

বছরের পর বছর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

নুরউল্লাহ কায়সার, ফেনী

ফাজিলপুর ওয়ালিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের খুঁটি ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ফেনীর ফাজিলপুর ওয়ালিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সব ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন নানা তদবির করেও প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা যায়নি। অবস্থায় জেলার শীর্ষস্থানীয় মাদ্রাসাটিতে অধ্যয়নরত হাজার ৬৬৭ শিক্ষার্থী ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শ্রেণী কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবন নির্মাণ না হওয়ায় অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের মাঝে ক্ষোভ অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ফাজিলপুর ওয়ালিয়া মাদ্রাসা। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মনসুর আলম চৌধুরীর উদ্যোগে দেড় একর জমিতে গড়ে ওঠা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে দীর্ঘ ছয় দশকে শত শত ব্যক্তি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা জনপ্রতিনিধিও হয়েছেন। কিন্তু পরিবর্তন আসেনি মাদ্রাসাটির অবকাঠামোয়। ১৯৬৭ সালে দাখিল ১৯৬৯ সালে আলিম-ফাজিল ডিগ্রির স্বীকৃতি লাভের পর ১৯৮৫ সালে মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হয়।

বর্তমানে হিফজ, নূরানী ফাজিল শ্রেণী পর্যন্ত হাজার ৬৬৭ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ৯৪৬ ছাত্র ৭২১ ছাত্রী। ফাজিল শ্রেণীতে ১২৩ আলিমে ১৯২ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এছাড়া হিফজ বিভাগে ৪২ নূরানী বিভাগে ২৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ষষ্ঠ সপ্তম শ্রেণীতে দুটি শাখা চালু করা হলেও কক্ষ সংকটের কারণে অষ্টম, নবম দশম শ্রেণী এবং নূরানীতে শাখা বাড়ানো যাচ্ছে না।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৮০ সালে মাদ্রাসার নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত তিনতলা মূল ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। তিন তলা ভবনের একটি কক্ষে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় ২০১৯ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে কক্ষটিতে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের অর্থায়নে নির্মিত তিন কক্ষবিশিষ্ট ভবনটিরও পিলার ভেঙে রড বেরিয়ে পড়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এসব ভবনে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই শ্রেণী কার্যক্রমে অংশ নিতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।  

সরজমিনে দেখা গেছে, মূল ভবনের একটি অষ্টম শ্রেণীর ১২৯ শিক্ষার্থীকে মাঝে পাঠদান করছেন শিক্ষক। কক্ষ সংকটের কারণে গাদাগাদি করে শ্রেণী কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কক্ষে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর ফলে শিক্ষকের কণ্ঠস্বর সবার কাছে পৌঁছে না। ফলে পেছনের টেবিলে বসা শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কার্যক্রমে অমনোযোগী হয়ে থাকে।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাঈনুদ্দীন খোন্দকার বলেন, ‘কক্ষ সংকট কাটাতে ছয়তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণে চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ডিও লেটার দিয়েছেন ফেনী সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতেনির্বাচিত মাদ্রাসা সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণে আরেকটি আবেদন করা হয়েছিল। ভবন সংকটের কারণে নানামুখী সমস্যা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন