আইইএলটিএস

কেন প্রয়োজন

ফিচার প্রতিবেদক

কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই যে কেউ এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। নেই কোনো বয়সের বাধ্যবাধকতা ছবি: ম্যাট রাইট

শুরুতেই একটি চমকপ্রদ তথ্য দিই। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রার্থী সংখ্যা ছিল ৩৬ হাজার ৪৫৩ জন। ২০২২ সালে সে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৬২৮ জনে। আনুপাতিক হারে পরীক্ষার্থী বৃদ্ধির হার ১৭৯ শতাংশ। ২০২০ সালে করোনাকালে প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ৫০০ এবং ২০২১ সালে ৩২ হাজার ৭০০ জন। হয়তো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এত শিক্ষার্থী আইইএলটিএস পরীক্ষা দিয়ে কী করছেন। এবার আসল কথায় আসা যাক। ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম (আইইএলটিএস) বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় ইংরেজি ভাষার পরীক্ষা। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার সনদ হলো আইইএলটিএস। ভাষাগত মূল্যায়নে বিশ্বের কিছু অগ্রণী বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষাটি তৈরি করেছেন এবং এতে আপনার ইংরেজির সবকটি দক্ষতা—রিডিং, রাইটিং, স্পিকিং ও লিসেনিং মূল্যায়ন করা হয়। এটি ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

মূলত আইইএলটিএস যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য অপরিহার্য ছিল। কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এ পরীক্ষার স্কোর গ্রহণ করছে এবং ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইইএলটিএস গ্রহণ করে থাকে। কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই যে কেউ এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। নেই কোনো বয়সের বাধ্যবাধকতা।

আইইএলটিএস পরীক্ষা পদ্ধতি দুই ধরনের। একাডেমিক ও জেনারেল। উচ্চশিক্ষায় বিদেশে যেতে ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের একাডেমিক আইইএলটিএস টেস্টে অংশ নিতে হয়। যে কেউ এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে। এজন্য কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। আইইএলটিএসের গ্রহণযোগ্যতা বিশ্বজুড়ে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী উচ্চশিক্ষা ও চাকরির লক্ষ্যে প্রতি বছর আইইএলটিএস পরীক্ষায় অংশ নেন। 

ইংরেজিভাষী পরিবেশে আপনি কীভাবে পড়াশোনা, কাজ করা ও বাসবাস করার জন্য ইংরেজির ব্যবহার করবেন পরীক্ষাটি তারই প্রতিফলন ঘটায়। বিদেশে পড়াশোনা, কাজ  কিংবা বাসবাস করতে চাইলেও দরকার হবে আইইএলটিএসের। ১৪০টির বেশি দেশে ১১ হাজারের বেশি সংগঠনের দ্বারা এ সনদ স্বীকৃত। এ সংগঠনগুলোর মধ্যে সরকারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ৩ হাজার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া আপনি যে দেশে যেতে চান সেখানেই যেতে পারবেন। বেশির ভাগ দেশেই যেখানে ইংরেজি প্রধান ভাষা, সেখানে আপনাকে চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সের জন্য আবেদন করতে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার প্রমাণ দেখাতে আইইএলটিএস সাহায্য করবে। এ পরীক্ষা দিয়ে আপনার ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণ করা আপনাকে  নিজের দেশেও আরো ভালো চাকরি বা পদোন্নতি পেতে সাহায্য করতে পারে। বিদেশে মাইগ্রেট করতে চাইছেন? আপনার আইইএলটিএস পরীক্ষার ফল আপনাকে অভিবাসনের শর্ত পূরণ করতেও সাহায্য করবে। ইংরেজি ভাষার পরীক্ষা দিতে হয় এমন সব অভিবাসন কর্তৃপক্ষই আইইএলটিএস গ্রহণ করে। যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি নয়, তাদের অনেক দেশে উচ্চশিক্ষা কিংবা ভিসার আবেদন করতে ভালো আইইএলটিএস স্কোর থাকতে হয়। উচ্চশিক্ষা ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশে ইমিগ্রেশনের ক্ষেত্রেও আইইএলটিএস স্কোর থাকা বাধ্যতামূলক। গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে টোফেলের চেয়ে অনেক এগিয়ে আইইএলটিএস। ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি অস্ট্রেলিয়া যৌথভাবে পরিচালনা করে আইইএলটিএস পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় নীতিনির্ধারক কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় হলেও বিশ্বব্যাপী পরীক্ষা পরিচালনা ও শিক্ষার্থীদের কাছে তথ্য পৌঁছে দেয়ার মূল ভূমিকা পালন করছে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি অস্ট্রেলিয়া।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন