বিগত এক দশকে বাংলাদেশ বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছে। এশিয়ার অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারের তুলনায় বাংলাদেশ এ সময়ে তুলনামূলকভাবে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। কিন্তু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের বীমা খাতের আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বীমা খাতের সমৃদ্ধি প্রত্যাশিত হারের চেয়ে অনেক কম। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মতে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের বীমা খাতের বিস্তৃতি দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.৫ শতাংশ ছিল, যা এশিয়ার অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে বিগত কয়েক বছরে দেশের বীমা ব্যবস্থার সার্বিক অগ্রগতির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন ও সমমনা কিছু বেসরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
বর্তমানে আমরা বীমা খাতে যেসব ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করছি তার নেপথ্যে যেসব বীমা কোম্পানি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে তাদের মধ্যে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড অন্যতম। ‘সবার জন্য বীমা'-এ লক্ষ্য সামনে রেখে গার্ডিয়ান লাইফ প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে বীমা সেবার আওতায় নিয়ে এসেছে, যার ৮৫ শতাংশই নারী। ইন্স্যুরেন্স সেবাকে সবার কাছে গার্ডিয়ান লাইফ সম্পূর্ণ নতুনভাবে উপস্থাপন করছে, যা এক দশক আগেও কেউ কল্পনা করেনি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বীমা খাতে যাত্রা শুরু করা এই কোম্পানিটির অন্যতম তিনটি দর্শন হলো- ‘সবার জন্য বীমা’, ‘সুরক্ষা ও নির্ভরতার অঙ্গীকার’ এবং ‘সুশাসন ও গ্রাহকসেবা’।
বীমা শিল্প মূলত প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারনির্ভর একটি খাত। আর এ প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের বার্তা সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে গার্ডিয়ান লাইফ ‘সবার জন্য বীমা’ মূলনীতি সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে। এই ধারণাকে বাস্তব রূপ দেয়ার জন্য গার্ডিয়ান লাইফ তার পরিষেবা, কার্যক্রম ও বিজনেস মডেলে নিয়ে এসেছে উদ্ভাবনী সব পরিবর্তন। ক্ষুদ্র বীমা ও গ্রুপ বীমাতে গার্ডিয়ান লাইফ অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে।
বীমা শিল্পের প্রসারের লক্ষে বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’ চালুকরণের যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স শুরু থেকেই তার সহযাত্রী। ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’ চালুকরণের লক্ষে গঠিত স্টিয়ারিং কমিটিতে গার্ডিয়ান লাইফ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয় এবং ব্যাংকাস্যুরেন্স সংক্রান্ত নীতি প্রণয়নে সক্রিয় এবং অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
একটি দৃঢ় ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবকাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে গার্ডিয়ান লাইফ বীমা খাতের সব পরিবর্তনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। বিগত পাঁচ বছরে গড়ে প্রতি বছর গার্ডিয়ান লাইফের লাইফ ফান্ড ২৫%, সম্পদ ৩৩% এবং বিনিয়োগ ৩৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। গার্ডিয়ান লাইফ বিশ্বাস করে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে একটি দূরদর্শী ও কার্যকরী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সততা ও ন্যায়ের যথাযথ প্রয়োগও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
পেশাদারির সর্বোচ্চ মাত্রা বজায় রেখে গার্ডিয়ান লাইফ শুরু থেকেই তার প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিগুলো ধারাবাহিকভাবে পূরণ করে আসছে। এ জীবন বীমা কোম্পানিটি মাত্র ৯ বছরে ১৩০০ কোটি টাকারও অধিক বীমা দাবি পরিশোধ করেছে, যা নির্ভরতা এবং বিশ্বস্ততার এক অনন্য নিদর্শন। গার্ডিয়ান লাইফের বীমা দাবি পরিশোধের হার ৯৮%, যা বাংলাদেশের ইন্স্যুরেন্স ইন্ডাস্ট্রিতে সর্বোচ্চ। গার্ডিয়ানের সব বীমা দাবি পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়, যার ৯০ শতাংশই মাত্র ৩ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়।
প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা ও উন্নত গ্রাহকসেবার মান নিশ্চিত করা গার্ডিয়ান লাইফের বীমা ব্যবসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। শুধু বীমা দাবি পরিশোধই নয়, গ্রাহকের প্রয়োজনে যেকোনো সময় পাশে থাকাই গার্ডিয়ান লাইফের অন্যতম লক্ষ্য। আগামী বছরগুলোতে নিশ্চিতভাবেই দেশের বীমা খাতে আসবে আরো অনেক পরিবর্তন ও উন্নয়নের ছোঁয়া। শুধু পলিসি বিপণন আর বীমা দাবি পরিশোধ করাই যথেষ্ট হবে না, বরং ইন্স্যুরেন্স সেবায় আরো নতুন নতুন বিষয় সংযোজনের মাধ্যমে কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্সকে এক নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াই হবে প্রতিযোগিতার মূল নিয়ামক। অর্থাৎ ভবিষ্যতে গ্রাহক কী চায় বা তার কী প্রয়োজন তা-ই প্রাধান্য পাবে, বিক্রেতা কী বিক্রি করতে পারবে বা চাইবে তা হয়ে পড়বে গৌণ।
সেই ভবিষ্যতের চিত্র বিবেচনায় রেখে গার্ডিয়ান লাইফ তার গ্রাহকদের সর্বোত্তম গ্রাহকসেবা প্রদানের জন্য নানাবিধ উদ্যোগ নিয়েছে এবং নিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ারের প্রচলন, গ্রাহকদের অনলাইনে সব ধরনের আর্থিক লেনদেন করার সুবিধা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-সংবলিত ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি, সুদক্ষ অবলিখন বিভাগের মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ে পলিসি ইস্যুকরণ ইত্যাদি গার্ডিয়ানের নানাবিধ উদ্যোগের উদাহরণ মাত্র। প্রযুক্তির উৎকর্ষে পৌঁছাতে গার্ডিয়ান প্রতিনিয়তই নিচ্ছে নতুন সব উদ্যোগ, যার কিছু উদাহরণ হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-বেজড ‘চ্যাটবট’ সেবা, ‘ডা. গার্ডিয়ান’ টেলিমেডিসিন সেবা, ‘ইজিলাইফ’ অ্যাপ, ‘মাইগার্ডিয়ান’ সেবা অ্যাপ, ক্যাশলেস স্বাস্থ্যবীমা ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা।
‘সবার জন্য বীমা’ নিশ্চিতকরণে এবং বীমা সম্পর্কে সাধারণ জনগণের নেতিবাচক ধারণার পরিবর্তনের লক্ষে গার্ডিয়ান লাইফ প্রতিনিয়তই সুশাসন প্রতিষ্ঠা, উদ্ভাবনী বীমা পণ্য প্রচলন ও উন্নত গ্রাহকসেবা প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।