ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি মনোমুগ্ধকর এক শিক্ষাঙ্গন

ফিচার প্রতিবেদক

ছবি: ইস্ট ডেল্টা ইফনিভার্সিটি

শতাব্দীর শুরুর দিকে গুণগত শিক্ষার খোঁজে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মাঝে বিদেশমুখিতা যখন চরমে, ঠিক সেই সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি। সংক্ষেপে ইডিইউ ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের অন্যতম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র দেড় দশকে বেড়ে হয়েছে আড়াই হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এর মধ্যে হাজার ১০০ শিক্ষার্থী স্নাতক পর্যায়ে এবং ৩৫০ জন শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষাদানে রয়েছে ১২০ জন পূর্ণকালীন এবং ৭০ জন খণ্ডকালীন দেশী-বিদেশী শিক্ষক।

বর্তমানে তিনটি অনুষদে সাতটি বিভাগের মাধ্যমে জ্ঞান বিতরণ করছে বিশ্ববিদ্যালয়। স্কুল অব লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের অধীনে রয়েছে ইংরেজি স্কুল অব বিজনেস অনুষদের আওতাধীন বিবিএ এবং এমবিএ বিভাগ অর্থনীতি বিভাগ। এছাড়া কম্পিউটার বিজ্ঞান প্রকৌশল, তড়িৎ ইলেকট্রনিক প্রকৌশল এবং ইলেকট্রনিক টেলিযোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের আওতাধীন।

প্রতিষ্ঠাকালে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ছিল স্বল্প পরিসরে অস্থায়ী ক্যাম্পাস। বর্তমানে নাসিরাবাদে সাত একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয়েছে নিজস্ব ক্যাম্পাস। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে সবুজ অরণ্যের মাঝে মনোমুগ্ধকর শিক্ষাঙ্গন রয়েছে পড়াশোনার জন্য উত্তম পরিবেশ। আধুনিক শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব, দেশী-বিদেশী বই সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, বিনোদন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে আন্তঃসম্পর্ক বাড়াতে রয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনাযোগ্য কারিকুলাম রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনলাইন অফলাইনের ক্লাসরুমের সমন্বয়ে ব্লেন্ডেড শিক্ষাদানের ব্যবস্থায়ও পিছিয়ে নেই বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতল লাইব্রেরির সারি সারি আলমারিতে থরে থরে সাজানো রয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার বই। ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে লাইব্রেরি। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি  বিভিন্ন দেশের ইউনিভার্সিটির জার্নাল পাওয়া যাবে লাইব্রেরিতে। বিশ্ববিখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্লভ কিছু বই নিয়ে লাইব্রেরিটিতে করা হয়েছে অক্সফোর্ড কর্নার। ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার ফাঁকে ক্যাম্পাস জব প্রকল্পের আওতায় কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এর মাধ্যমে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু শাখায় সহযোগী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পায়। এতে অভিজ্ঞতার পাশাপাশি মিলছে সম্মানীও। এছাড়া পড়ালেখায় উদ্বুদ্ধ করতে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে চার ধরনের মেধাবৃত্তি। পড়ালেখার পাশাপাশি নানা ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রমের সুযোগ পায় ইডিইউর শিক্ষার্থীরা। লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সাংস্কৃতিক ক্লাব, বিতর্ক ক্লাবসহ মোট ১৬টি ক্লাব। পড়াশোনায় একঘেয়েমি দূর করতে রয়েছে কমনরুম। সেখানে টেবিল টেনিসসহ নানা ধরনের ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা আছে। আছে স্বাস্থ্যসম্মত ক্যাফেটেরিয়া। খোলা আকাশের নিচে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠতে রয়েছে মুক্তমঞ্চ।

ইডিইউ বিশ্বাস করে শিক্ষা সবার সহজলভ্য হওয়া উচিত। তাই তারা মেধাবৃত্তিসহ ভর্তি-পূর্ব ভর্তি-পরবর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য নানা ধরনের আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা রেখেছে। যেন দরিদ্র শিক্ষার্থীরা গুণগত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে প্রতিটি ক্লাসরুমে সর্বোচ্চ ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করা হয়, এতে করে ছাত্র-শিক্ষক বোঝাপড়া ভালো হয়। উন্নত ল্যাবে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ পায় শিক্ষার্থীরা, এতে করে তত্ত্বীয় জ্ঞানের পাশাপাশি বাস্তবিক জ্ঞানও পাচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রকৌশলীরা। তরুণদের মেধা বিকাশ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে করা হয়েছে শিক্ষা বিনিময় চুক্তি।

ইডিইউ সম্প্রতি কিছু অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কোর্স কারিকুলাম পুনর্বিন্যাস করেছে। যেগুলোর মধ্যে নেতৃত্ব উন্নয়ন শিক্ষার্থীদের সফট স্কিল প্রদান অন্যতম। এছাড়া শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে ভাইভার অভিজ্ঞতা, ব্যক্তিত্ব বিকাশ, দৃষ্টিভঙ্গির উন্নতি সাধন, দলীয় আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়। শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনা খুঁজে বের করা এবং সেই ক্ষেত্রেই দক্ষ করে গড়ে তোলা। প্রতিটি শিক্ষার্থীর আগ্রহ, একাডেমিক পারফরম্যান্স বিশেষ দক্ষতা তালিকা করা। অল্প সময়ের মধ্যে অগ্রগতির জন্য গুণগত শিক্ষাই মূল কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন