বহুমুখী চ্যালেঞ্জে বৈশ্বিক জ্বালানি স্থানান্তর

বণিক বার্তা ডেস্ক

বৈশ্বিক জ্বালানি খাত বর্তমানে পরিবর্তনের ধারায় আছে। কভিড-১৯ মহামারী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব জ্বালানি খাতের সংকটকে প্রকট করে তুলেছে। এতে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্বের অনেক দেশই জ্বালানি উৎপাদন, সংরক্ষণ সুরক্ষা কৌশলগুলো পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে। ভবিষ্যতে বড় সংকট এড়াতে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু পরিবর্তন খুব সহজেই সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিনিয়োগস্বল্পতা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে প্রযুক্তি খাতে ব্যয়ের ঘাটতি, সাপ্লাই চেইনে সংকটসহ নানা প্রতিবন্ধকতা জ্বালানি স্থানান্তরে বড় চ্যালেঞ্জ।

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) প্রকাশিত তথ্যমতে, অদূর ভবিষ্যতে সব ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানির পরিমাণ কমবে। এবারই প্রথম এমন পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। আইইএ ধারণা, চলতি দশকে বিশ্বব্যাপী জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদা রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছবে। তবে কেবল অল্পসংখ্যকই বিষয়টির সঙ্গে একমত। তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক বলছে, বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবেলা করতে যেসব পরিবেশ নিরাপত্তা কর্মসূচি নেয়া শুরু হয়েছে, তাতে জ্বালানি তেলের চাহিদা শিগগিরই বাড়বে না।

ধরনের অনিশ্চয়তা আপাতত স্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে। কেননা জ্বালানি খাতের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি কেমন হবে, তা উন্নত দেশ কিংবা অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুধাবন করা প্রয়োজন। কভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন যুদ্ধ বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির প্রবাহকে অস্বাভাবিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছে। বিশ্ব এখন একটি নতুন দ্বারের সম্মুখ্যে। নীতিনির্ধারকদের জন্য এখন কয়েকটি পথ খোলা। কোনটি ধরে এগোতে হবে তা নির্ধারণ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

ক্রমবর্ধমান জটিলতার কথা মাথায় রেখে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) বলছে, জ্বালানি খাতের ভবিষ্যৎ আটটি মূল সূচক দ্বারা চিহ্নিত করা যাবে। এগুলো হলো নীতিনির্ধারণ, নতুন জ্বালানি সুরক্ষা চ্যালেঞ্জ, জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাব, কার্বন নিঃসরণ হ্রাসকরণ ব্যয়, সরকারি বিনিয়োগ মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি মূল্যের অস্থিরতা, অপর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোয় অপর্যাপ্ত জ্বালানি সংগ্রহ। আটটি বাস্তবতা মাথায় রেখে বেসরকারি সরকারি খাতে নতুন কৌশল গ্রহণ করতে হবে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস কর্মসূচি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বড় ধরনের অর্থায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে জ্বালানি নিরাপত্তার ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব সাপ্লাই চেইনগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন প্রযুক্তি পরিচালনের জন্য বর্তমান ব্যয় এবং ২০৩০ সালের প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ২২ ট্রিলিয়ন ডলার ঘাটতি রয়েছে। অর্থায়নের ঘাটতি জ্বালানি সরবরাহ সংকটকে আরো প্রকট করে তুলবে। জ্বালানি চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা অব্যাহত থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন