পাচারের শিকার হয়ে থাইল্যান্ডের জেলে বাংলাদেশীরা

ফেরানোর সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে স্বজনদের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দালাল চক্রের প্রলোভনে নয় বছর আগে সমুদ্রপথে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে পাড়ি দেন কক্সবাজারের মোজাহের মিয়া। এর পর থেকেই তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না স্ত্রী জেবা। পরে ২০১৯ সালে থাইল্যান্ডের জেল থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফেরা পাচারের শিকার আরেক ব্যক্তির মাধ্যমে জানা যায়, মোজাহের মিয়া বন্দি আছেন বাং কেওয়াং সেন্ট্রাল জেলে। সেই থেকেই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে নানা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে তার পরিবার। সর্বশেষ ২৮ সেপ্টেম্বর সহায়তা চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন তার স্ত্রী জেবা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেয়া চিঠিতে জেবা উল্লেখ করেছেন, পাচারের শিকার হওয়া মোজাহের মিয়া তার জন্য নির্ধারিত সাজা ভোগ করার পরও ছয় বছর ধরে জেলে। ২০১৯ সাল থেকে তিনি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবর তার স্বামীকে ফেরত আনতে আবেদন করেন। সরকারি নিয়ম মেনে নির্ভুলভাবে আবেদন করেন তিনি। পরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে থাইল্যান্ডের জেলে বন্দি স্বামীকে নিজ দেশে ফিরিয়ে আনতে আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনের পর কেটে যায় আরো তিন বছর, কোনো ফল পাননি। দীর্ঘ নয় বছর মোজাহের বিদেশের জেলে বন্দি। জেবার আশা, মৃত্যুর আগে যেন প্রিয় মানুষটির মুখটা একবার দেখতে পারেন।

শুধু মোজাহের মিয়াই নন। মানব পাচারের শিকার হয়ে থাইল্যান্ডের জেলে বন্দি রয়েছেন অনেক বাংলাদেশী। যাদের প্রায় সবাই ২০১৩ সালে কক্সবাজার থেকে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে সাগরপথের ভয়ানক যাত্রায় বের হন। পথে অনেকেই আটক হন থাই পুলিশের কাছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ কী, তা না জানা মানুষগুলো গ্রেফতার হয় ভিনদেশী পুলিশের হাতে। এমনভাবেই গ্রেফতার হন মহেশখালীর আজিজুল হক, মকসুদ মিয়া মোজাহের। আটক হওয়ার পর কেউই আর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ পায়নি।

অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে, মানব পাচারের শিকার হওয়া মহেশখালী উপজেলার হতদরিদ্র ওই মানুষগুলো যখন জীবনযুদ্ধে লিপ্ত ছিল ওই মুহূর্তে তাদের কাছে ভাগ্যের চাকা ঘুরানোর প্রস্তাব নিয়ে আসে দালাল চক্র। গ্রামের সহজ-সরল নিরক্ষর মানুষকে বুঝিয়ে বিদেশ যাওয়া একদম সহজ, ট্রলারে উঠলেই চলে যেতে পারবেন থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া। রাতারাতি ভাগ্য পরিবর্তন হবেএমন ফাঁদ পাতে দালাল। দালালের খপ্পরে পড়ে সহায়-সম্বল বিক্রি করে বা সুদে টাকা নিয়ে দালালকে ব্যক্তিভেদে প্রদান করা হয় থেকে লাখ টাকা। পরে যাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন