এনভয় টেক্সটাইলসের আয় বেড়েছে ৪৪ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) পুঁজিবাজারে তালিকভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের উল্লেখযোগ্য ব্যবসা প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৫৫০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৩৮১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সময়ের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৪৪ শতাংশ।

গতকাল অনুষ্ঠিত সভায় চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে এনভয় টেক্সটাইলসের পর্ষদ। প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৩ কোটি টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল কোটি ১৭ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে টাকা ৩৭ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৭ পয়সা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৩৮ টাকা ৬৬ পয়সা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এনভয় টেক্সটাইলসের আয় হয়েছে ৩১৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ১৮৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল কোটি টাকা। চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে টাকা ১৭ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৪ পয়সা।

সম্প্রতি এনভয় টেক্সটাইলসের ৮৭ কোটি টাকার প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পাঁচ বছর মেয়াদি প্রেফারেন্স শেয়ারের বৈশিষ্ট্য হলো এটি পুরোপুরি অবসায়নযোগ্য, রূপান্তর অযোগ্য কিউমুলেটিভ প্রেফারেন্স শেয়ার। প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে শেয়ার ইস্যু করা হবে। প্রতিটির অভিহিত মূল্য হবে ১০ টাকা। কুপন হার শতাংশ থেকে দশমিক শতাংশ। শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি ময়মনসিংহের ভালুকায় বিদ্যমান কারখানায় ব্লেন্ডেড ইয়ার্ন উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়াবে। পাশাপাশি সংগৃহীত অর্থের কিছু অংশ উচ্চসুদের ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হবে। নির্ধারিত হারে অর্ধবার্ষিক ভিত্তিতে প্রেফারেন্স শেয়ারে বিনিয়োগের বিপরীতে লভ্যাংশ প্রদান করা হবে। বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে।

এদিকে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পর্ষদ সভায় ২০০ কোটি টাকার জিরো কুপন বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টে অর্থায়নের পাশাপাশি উচ্চসুদের ঋণের অর্থ পরিশোধে ব্যয় করা হবে। বিএসইসির অনুমোদন সাপেক্ষে পাঁচ বছর মেয়াদি বন্ড ইস্যু করা হবে। পুরোপুরি অবসায়নযোগ্য বন্ড শেয়ারে রূপান্তর করা যাবে না। বন্ডের ডিসকাউন্টের পরিমাণ সাড়ে থেকে সাড়ে শতাংশের মধ্যে থাকবে। এক্ষেত্রে বন্ডটি যদি পুরোপুরি সাবস্ক্রিপশন হয় তাহলে এর বিনিয়োগকারীদের নির্ধারিত মেয়াদ শেষে ২০০ কোটি টাকা ফেরত দেবে এনভয় টেক্সটাইলস। আর ডিসকাউন্ট দিয়ে কোম্পানি পাবে ১৬৮ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বন্ডে বিনিয়োগ মোট ১০টি সিরিজে বিভক্ত থাকবে। প্রতি ছয় মাস পরপর একেকটি সিরিজের মেয়াদ শেষ হবে। মেয়াদ শেষে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির কাছে বন্ড জমা দিয়ে পাওনা অর্থ নিতে পারবেন।

সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরে শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে এনভয় টেক্সটাইলস। এছাড়া সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। সেই হিসাবে আলোচ্য হিসাব বছরে মোট ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫৬ পয়সা। এর আগের হিসাব বছরে যা ছিল টাকা ৬৩ পয়সা।

রফতানিমুখী পরিবেশবান্ধব ডেনিম কোম্পানিটি ২০১২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে এর অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৬৭ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৩৫৪ কোটি ১২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৭। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে ৪৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫০ দশমিক ৩৯, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক শূন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে বাকি দশমিক ৯৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত বৃহস্পতিবার এনভয় টেক্সটাইলসের শেয়ার সর্বশেষ ৪৮ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ২১ টাকা ২০ পয়সা ৫৫ টাকা ২০ পয়সা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন