বাংলাদেশ-পাকিস্তান চট্টগ্রাম টেস্ট শুরু আজ

তবু বাংলাদেশকে আশা দেখাচ্ছেন মুমিনুল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুঃসময় চলছে। দলে নেই সাকিব আল হাসান তামিম ইকবালের মতো পরীক্ষিত সেনা। টেস্ট ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় বলেছেন মাহমুদউল্লাহ। গত দুই মাসে নয়টি ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। মাঠের ব্যর্থতার সঙ্গে যোগ হয়েছে ড্রেসিংরুম বাইরের অস্থিরতা। এমন পরিস্থিতিতে দুই টেস্টের সিরিজে শক্তিশালী পাকিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ। আজ সকাল ১০টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে অগ্নিপরীক্ষায় নামছেন তরুণ অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ।

বিধ্বস্ত, বিক্ষিপ্ত দলকে সঠিক রাস্তায় ফেরানোর গুরুভার এখন ছোট্ট মুমিনুলের কাঁধে। তিনি অবশ্য দলকে সাহসই দেখাচ্ছেন। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল বলেন, এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এই প্রথম যাচ্ছে না বাংলাদেশ। অতীতেও আমরা এসবের মুখোমুখি হয়েছি। আমার কাজ হলো, মানুষ যা বলছে তাতে মনোযোগ না দিয়ে বরং নিজের কাজটাতে মনোযোগ দেয়া। আমরা একে অন্যকে উৎসাহ দিচ্ছি। আপনি তো আর কারো মুখ বন্ধ করে দিতে পারেন না, আপনি বরং নিজের কান দুটো বন্ধ রাখতে পারেন।

সাকিব, তামিমের মতো শীর্ষ তারকা দলে নেই। এর পরও মনোবল হারাতে চান না মুমিনুল। তিনি বলেন, তরুণ একটি দল নিয়ে আমার মতো তরুণ অধিনায়কের ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে যাত্রা চ্যালেঞ্জিংই বটে। তামিম ভাই ভালো শুরু এনে দিতেন, যার ওপর দাঁড়িয়ে আমরা স্কোরটা বড় করতাম। সাকিব তো একের ভেতরে দুই সম্প্রতি তাসকিনও দুর্দান্ত বোলিং করে এসেছে। আমরা বিশেষভাবে চারজন খেলোয়াড়ের অভাব অনুভব করব। এটা আমার নেতৃত্বকে খুব বেশি পরীক্ষার মুখে ফেলে দেবে। কিন্তু আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, এটা তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য বিরাট এক সুযোগ। আমি মুশফিক ভাই বাড়তি দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেব।

আবু জায়েদ রাহী, মেহেদী হাসান মিরাজ তাইজুল ইসলামসহ যারা স্কোয়াডে রয়েছেন তাদের নিয়েই ভাবতে চান মুমিনুল। তার কথায়, মুস্তাফিজুর (রহমান) লম্বা সময় ধরে টেস্ট খেলেনি। কিন্তু তাসকিন শরিফুল (ইসলাম) দুর্ভাগ্যজকভাবে চোটে পড়েছে। আমাদের এখন স্কোয়াডে যারা আছে তাদের নিয়েই ভাবতে হবে। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে আমাদের হয়ে শীর্ষ উইকেটশিকারি বোলার রাহী। এবাদতও (হোসেন) নিয়মিত টেস্ট খেলছে। আমাদের আরো আছে মিরাজ তাইজুল। বোলারদের ওপর আমার পুরো আস্থা রয়েছে। আমি মনে করি, ভালো বোলিং করলে এই ম্যাচে ২০ উইকেট নিতে পারব আমরা।

মুমিনুল যা- বলুন, কাজটি তাদের জন্য কঠিনই। তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর এবার দুই টেস্টের সিরিজে অতিথি পাকিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ। টেস্টের ইতিহাসও পাকিস্তানের পক্ষে। এখন পর্যন্ত ১১ টেস্টের দ্বৈরথে কখনই পাকিস্তানকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের ড্রই বাংলাদেশের সেরা ফল। যদিও সেরা লড়াইটি বাংলাদেশ করেছিল ২০০৩ সালে মুলতানে, যখন জিততে জিততে শেষ পর্যন্ত মাত্র এক উইকেটে হার মেনেছিল বাংলাদেশ দল।

২০০১ সালের আগস্টে ঢাকায় বাংলাদেশের ইনিংস ২৬৪ রানের পরাজয়ে শুরু দ্বৈরথে কাল ১২তম ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুটি দল। আগের ১১ লড়াইয়ের মধ্যে পাঁচবারই বাংলাদেশকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান। এছাড়া তাদের বাকি জয়গুলো যথাক্রমে উইকেটে, উইকেটে, উইকেটে, উইকেটে ৩২৮ রানের। এর পরও নিজেদের দুর্গ চট্টগ্রামে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম জয়ের আশাতেই আজ নামবেন মুমিনুল তার সহযোদ্ধারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন