জেলহত্যা দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ নভেম্বর। জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এএইচএম কামারুজ্জামানকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি কলঙ্কময় দিন।

নির্মম ঘটনার ঠিক আগে একই বছরের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তার ঘনিষ্ঠ চার সহকর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রতি বছর দিনটি জেলহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

জাতীয় চার নেতাকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে কালো অধ্যায় স্মরণ করবে বাংলাদেশ। উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল সংগঠন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবন, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সব দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, কালো পতাকা উত্তোলন কালো ব্যাজ ধারণ। সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এরপর সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে জাতীয় তিন নেতার কবরে ফুল দেয়া হবে। সেখানে ফাতিহা পাঠ মোনাজাত করা হবে। একইভাবে রাজশাহীতে জাতীয় নেতা কামারুজ্জামানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে ফাতিহা পাঠ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

জেলহত্যা দিবসে আজ বেলা ১১টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যায় যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল তা প্রমাণিত হয়েছে বলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলায় (জেলহত্যা) পলাতক দুই আসামি এলডি (দফাদার) আবুল হাসেম মৃধা দফাদার মারফত আলী শাহকে নিম্ন আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেয়া ২৩৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয়।

১৯৭৫ সালের নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরদিন তত্কালীন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উপকারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই ঘটনায় মামলা দায়েরের ২৩ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১৯৯৮ সালের ১৫ অক্টোবর অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান রায় ঘোষণা করেন।

বিচারিক আদালত রায়ে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ এলডি (দফাদার) আবুল হাসেম মৃধাকে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা একেএম মহিউদ্দিন আহমেদসহ ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতা কেএম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর তাহেরউদ্দিন ঠাকুরকে খালাস দেয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন