কুমিল্লায় ক্রমেই বাড়ছে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। থেমে নেই মৃত্যু সংখ্যাও। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এখন কোনো আইসিইউ শয্যা খালি নেই। প্রতিনিয়ত এখানে জেলার ১৭ উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে আসছে নতুন রোগী। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
এদিকে কুমেক হাসপাতালে আইসিইউ শয্যার জন্য আগেভাগে সিরিয়াল দিয়ে রাখছেন রোগীর স্বজনরা। কোনো রোগী মারা গেলে কিংবা কিছুটা সুস্থ হলেই কেবল আইসিইউ শয্যা খালি হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত কুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে পুরনো ১৫৬ জন ছাড়াও নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ২৮ জন। পুরনোদের মধ্যে ১১৪ জনেরই করোনা পজেটিভ বলে চিকিত্করা জানিয়েছেন।
কুমেকের করোনা ইউনিট সূত্রে জানা যায়, এখানে আগে শয্যা ছিল ১৩৬টি। এর মধ্যে ২০টি আইসিইউ শয্যা এবং ১০টি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) শয্যা। কিন্তু রোগীর চাপ বাড়ায় এক সপ্তাহ আগে বিকল্প উপায়ে আরো ৫০টি শয্যা বাড়ানো হয়েছে। তবে এগুলোতে সিলিন্ডারের মাধ্যমে রোগীদের অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন রোগীর চাপ বাড়লেও সীমিত জনবল দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে নতুন ও পুরনো রোগীদের মধ্যে অনেকে মুমূর্ষু থাকলেও আইসিইউ শয্যা না থাকায় চিকিৎসকরা পড়েছেন বিপাকে। করোনায় আক্রান্তদের অক্সিজেন লেভেল দ্রুত নেমে যাওয়া ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেন অথবা আইসিইউর প্রয়োজন হলেও শয্যা সংকটে সে ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না।
গতকাল কুমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. রেজাউল করিম বলেন, বর্তমানে এখানে আইসিইউ সাপোর্ট দরকার এমন অনেক রোগী রয়েছে, কিন্তু আইসিইউ শয্যা খালি নেই। কারো মৃত্যু কিংবা সুস্থ হলে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় আইসিইউ শয্যা দেয়া হচ্ছে।
কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেন বলেন, কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ও আইসিইউ না থাকলেও পাঁচটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাসহ তিন ধাপে বাড়িয়ে বর্তমানে ৯০টি শয্যা স্থাপন করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি ছিল ৬৬ জন। তিনি আরো বলেন, জেলায় এরই মধ্যে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৬৬২ তে দাঁড়িয়েছে। তাই জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি না পেলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে।