গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্বীকৃত সংগঠনের বাইরে কোন মনগড়া বা হঠাৎ গজিয়ে উঠা সংগঠনকে আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত হওয়া এবং করার কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার নিজের সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী আওয়ামী লীগের রয়েছে সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিভিন্ন উপকমিটি। স্বীকৃত সংগঠনের বাইরে যে কোন নামের সাথে 'লীগ' বা 'আওয়ামী' শব্দ জুড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, দল ক্ষমতায় থাকলে নানান সুবিধাভোগী শ্রেণী এবং বসন্তের কোকিলরা এ ধরনের চেষ্টায় লিপ্ত হয়, যুক্ত হয় নানান আগাছা - পরগাছা। দলীয় সভানেত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দলের মধ্যে কারো প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে এ ধরনের কাজে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যক্তি-স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
কোন বিতর্কিত ব্যক্তির দলে অনুপ্রবেশ ঘটলে কিংবা কারো কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠলে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে নির্বাচনী ট্রাইবুনালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
ব্রিফিংয়ে পদ্মাসেতু নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, পদ্মাসেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অসীম সাহসের সোনালী ফসল এ সেতু। পদ্মাসেতু নির্মানের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে নানামুখী ষড়যন্ত্র হয়েছে। তবে দৃশ্যমান ও অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ভেঙে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকেই নানা গুজব, অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে দেশবিরোধী এবং উন্নয়ন বিরোধী একটি অপশক্তি। মনুষ্যসৃষ্ঠ নানা বাধা ও ষড়যন্ত্র এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রমত্তা পদ্মার বুকে এখন দৃশ্যমান স্বপ্নের পদ্মাসেতু।
এ সময় পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজের সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরেন সেতুমন্ত্রী। তিনি জানান, গত ২৪ জুলাই ২০২১ পর্যন্ত পদ্মাসেতুর মূল অবকাঠামোর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি শতকরা ৯৪ ভাগ এবং সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮৭ ভাগ।
সম্প্রতি পদ্মায় চলমান একটি ফেরির সেতুর পিয়ারে আঘাত প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আঘাতকারী ফেরির ওজন ছিলে ১২ শত ৮৪ টন, আর পদ্মাসেতুর ডিজাইন অনুযায়ী ৩০ নটিক্যাল মাইল গতিতে ৪ হাজার টন ওজনের নৌ-যানের ধাক্কা সামলানোর ক্যাপাসিটি রয়েছে প্রতিটি পিয়ারের। এ ঘটনার পর পরই বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী, কারিগরি কমিটির সদস্যগণ, পরামর্শক ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ইতিমধ্যেই ফেরির মাস্টার চালকসহ দুইজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ফেরির ধাক্কায় পিয়ারের কোন ক্ষয়-ক্ষতি না হলেও এটি নিছক কোন দূর্ঘটনা নাকি উদ্দেশ্যমূলক ষড়যন্ত্রের অংশ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গর্বের এ সেতু নিয়ে আগেও ষড়যন্ত্র হয়েছিলো, এখনও যে নেই তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
