‘রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা’ যথোপযুক্ত এবং দূরদর্শী নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২১ সালের জন্য জাতিসংঘ গৃহীত রোহিঙ্গা সাড়াদান পরিকল্পনাকে (জেআরপি) সংকট মোকাবেলায় যথোপযুক্ত নয় বলে অভিমত প্রকাশ করেছে কক্সবাজারে কর্মরত ৫০টি স্থানীয়-জাতীয় এনজিও-সুশীল সমাজ সংগঠনের নেটওয়ার্ক সিসিএনএফ। আগামীকাল জেআরপির আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা উপলক্ষে আয়োজিতজাতিসংঘের রোহিঙ্গা সাড়াদান পরিকল্পনা (জেআরপি) ২০২১: শরণার্থী ব্যবস্থাপনায় যথোপযুক্ত নয় শীর্ষক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সিসিএনএফের কো-চেয়ার এবং কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী। আরো বক্তব্য রাখেন পালসের নির্বাহী পরিচালক আবু মোর্শেদ চৌধুরী, ইপসার প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আরিফুর, মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল দে সরকার ও কোস্ট ফাউন্ডেশনের যুগ্ম পরিচালক মো. মজিবুল হক মনির।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জেআরপি/রোহিঙ্গা প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা ২০২১ তৈরির সময় স্থানীয় ও জাতীয় এনজিও প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে লিখিত মতামত পাঠানো হয় এবং ৬ মে বিষয়টি নিয়ে একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়, যেখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তবে রোহিঙ্গা সংকট ব্যবস্থাপনায় স্থানীয়দের মতামত ওই দলিলে প্রতিফলিত হয়নি বললেই চলে। গত চার বছরে জাতিসংঘের বিদেশী কিছু কর্মকর্তার নেতৃত্বে পরিচালিত ইন্টার সেক্টোরাল কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ বা আইএসসিজি রোহিঙ্গা কর্মসূচির জন্য প্রাপ্ত তহবিলের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি। প্রাপ্ত অর্থের কত অংশ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যয় করা হয়েছে, স্থানীয় উত্স থেকে কেনাকাটায় কত ব্যয় করা হয়েছে, স্থানীয়দের মধ্য থেকে কতজনকে নিয়োগ করা হয়েছে এসব তথ্যও বিস্তারিত প্রকাশ করতে পারেনি।

তার মতে, স্থানীয়-জাতীয় এনজিও এবং অনেক আন্তর্জাতিক এনজিওর (যেমন আইএফআরসি ও এমএসএম) কার্যক্রম, তাদের প্রাপ্ত অর্থের তথ্য জেআরপিতে অন্তর্ভুক্ত হয় না। তাই আইএসসিজি রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় কতটা কার্যকর সেটা প্রশ্নবিদ্ধ। তাছাড়া ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির বিশ্লেষণ নেই জেআরপিতে, আগামী পাঁচ বা ১০ বছরে কোনো প্রত্যাবাসন না হলে এ সংকট মোকাবেলায় কী করা হবে সেটা এখনই ভাবা প্রয়োজন। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে অতিরিক্ত ঘনবসতি একটি বড় সমস্যা, এ সমস্যা নিরসনে সিসিএনএফ এরই মধ্যে সহজেই স্থানান্তরযোগ্য এবং স্থাপনযোগ্য দুইতলা ঘরের সুপারিশ করে আসছে। যেহেতু রোহিঙ্গাদের ৬৫ শতাংশ যুবক-কিশোর, তাই তাদের জন্য প্রয়োজন স্বীকৃত শিক্ষা ব্যবস্থা, তাদের জন্য আয়ের ব্যবস্থাও থাকতে হবে, যাতে তারা কোনো সন্ত্রাস ও অবৈধ কার্যকলাপে প্রলুব্ধ না হয় এবং চলমান কক্সবাজার উন্নয়নের জন্য হুমকিতে পরিণত না হয়।

আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় পৃথক তিনটি লাইন বা কর্তৃপক্ষ আছে, যেমন আইএসসিজি, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরসিসি) এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন