বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে

তিন মাসে সর্বোচ্চ লেনদেন ডিএসইতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণে লাগাম টানতে সরকারের জারি করা বিধিনিষেধের মধ্যেও ঊর্ধ্বমুখিতা রয়েছে পুঁজিবাজারে। দেশের উভয় পুঁজিবাজারে গতকাল সবগুলো সূচক বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনও। গতকাল ডিএসইতে তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে অধিকাংশ কোম্পানি ফান্ডের বাজারদর।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক ফলাফলের দিকে লক্ষ রেখে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার প্রবণতার কারণে বাজার ভালো অবস্থানে রয়েছে। তারা মনে করছেন বর্তমান লকডাউনে শিল্প-কারখানা চালু থাকার ফলে গত লকডাউনের মতো ব্যবসায়িক কার্যক্রমে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। এছাড়া পোর্টফোলিও পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে অনেকেই নতুন করে বিনিয়োগ করছেন। কারণে গতকাল বাজারে বিনিয়োগকারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর পর থেকে সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এর কিছু সময় পর সূচকের সামান্য নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এরপর আবার উত্থান পতনের মাধ্যমে মিশ্র অবস্থায় লেনদেন শেষ হয়। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৭ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৫১৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ৪৭৯ দশমিক ৬১ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, সামিট পাওয়ার, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, গ্রামীণফোন, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লাফার্জহোলসিম কোম্পানির।

এদিকে ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে দশমিক ২৯ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ২৫৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে, যা আগের দিন ছিল হাজার ২৪৯ দশমিক ৮১ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ১২ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল হাজার ১২৩ দশমিক ৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ১১০ দশমিক ৯১ পয়েন্টে। গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে হাজার ৪০৬ কোটি ৯৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। যা গত তিন মাস সাতদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে ডিএসইতে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি হাজার ৫৮৫ কোটি ২২ লাখ হাজার টাকার লেনদেন হয়। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১৮০টির, কমেছে ১০৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৭টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৮ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে সাধারণ বীমা খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। দশমিক ৩২ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত। দশমিক ২৮ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল জ্বালানি বিদ্যুৎ খাতের। আর দশমিক ১১ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ফার্মাসিউটিক্যালস খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল ফিড মিলস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, সামিট পাওয়ার, সিটি জেনালের ইন্স্যুরেন্স ম্যাকসন্স স্পিনিং।

গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দরবৃদ্ধির শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, ম্যাকসন্স স্পিনিং, মতিন স্পিনিং, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, আর্গন ডেনিমস, মালেক স্পিনিং, মোজাফফর হোসেইন স্পিনিং মিলস, ড্রাগন সুয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং, মেট্রো স্পিনিং কুইন সাউথ টেক্সটাইল।

অন্যদিকে ডিএসইতে গতকাল সবচেয়ে বেশি দর কমেছে অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, মাইডাস ফাইন্যান্স, নর্দার্ন ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, রেকিট বেনকিজার, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, গ্রামীণ ওয়ান: স্কিম টু, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ১ম মিউচুয়াল ফান্ড।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ৭৪ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৬৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল হাজার ৫৬০ দশমিক শূন্য পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৬৭টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৫টির, কমেছে ৮২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪০টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ৩১ কোটি ৭৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন