৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়েছে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত বছরের মার্চে দেশে প্রথমবারের নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ব্যাপক দরপতনের মুখে পড়ে পুঁজিবাজার। প্রতিদিন সূচকের পতনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। দরপতন ঠেকানোর পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক দূর করতে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সর্বনিম্ন দর বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর ফলে দরপতন ঠেকানো গেলেও অনেক শেয়ারই ফ্লোর প্রাইসে এসে থমকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকার কারণে পুঁজিবাজারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কোম্পানি শেয়ারের লেনদেন হচ্ছে না। অচলাবস্থা দূর করতে ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

গতকাল বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৭৬৯তম কমিশন সভায় ৬৬টি কোম্পানির ক্ষেত্রে ফ্লোর প্রাইস-সংক্রান্ত কমিশনের নির্দেশনা থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই মধ্যে বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১১০টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের বাজারদর ফ্লোর প্রাইস একই। এর ফলে কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেন না হওয়ার কারণে বর্তমানে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। অবস্থায় এই শেয়ারগুলোকে লেনদেনযোগ্য করে তুলতে প্রথম দফায় ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বাজার মূলধনে কোম্পানিগুলোর হিস্যা দশমিক শতাংশ। ফলে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়ার কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কমে গেলেও পুঁজিবাজারে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। এই ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়ার প্রভাব পর্যবেক্ষণ করে বাকি ৪৪টি কোম্পানির বিষয়ে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশের দর বর্তমানে ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। ক্রেতা না থাকার কারণে এই সিকিউরিটিজগুলোর লেনদেনও হচ্ছে না। পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন ৫০ টাকা পর্যন্ত দর রয়েছে এমন ৬৬টি সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে লেনদেন খরা কাটবে এবং যেসব বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিওতে শেয়ারগুলো রয়েছে তারা চাইলে সেগুলো বিক্রি করে অন্য শেয়ার কিনতে পারবেন।

যেসব কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল  সার্ভিসেস, আরএন স্পিনিং মিলস, বাংলাদেশ সার্ভিসেস, আইএফআইএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, জাহিন স্পিনিং, রিং শাইন টেক্সটাইলস, অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ফিনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, নূরানী ডায়িং অ্যান্ড সোয়েটার, রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস, এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড, এভিন্স টেক্সটাইলস, প্যাসিফিক ডেনিমস, মেট্রো স্পিনিং, কাট্টলী টেক্সটাইল, ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, দেশবন্ধু পলিমার, ইয়াকিন পলিমার, সাফকো স্পিনিং মিলস, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, বিচ হ্যাচারি, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, হামিদ ফেব্রিকস, প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং মিলস, সায়হাম কটন মিলস, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, এএফসি এগ্রো বায়োটেক, বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিক, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, আর্গন ডেনিমস, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, শাশা ডেনিমস, সুহূদ ইন্ডাস্ট্রিজ, এসকোয়ার নিট কম্পোজিট, ভিএফএস থ্রেড ডায়িং, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস, কুইন সাউথ টেক্সটাইল মিলস, মিউচুয়ার ট্রাস্ট ব্যাংক, ওইমেক্স ইলেকট্রোড, রূপালী ব্যাংক, সায়হাম টেক্সটাইল মিলস, সোনারগাঁও টেক্সটাইলস, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, নাভানা সিএনজি, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স, উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস, উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি, খুলনা পাওয়ার, নাহি অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল, দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল এমএল ডায়িং লিমিটেড।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন