১৯৭৩ সালে পশ্চিমকে বিপদে ফেলা সৌদি তেলমন্ত্রী ইয়ামানির মৃত্যু

বণিক বার্তা অনলাইন

সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের তেলমন্ত্রী আহমেদ জাকি ইয়ামানি মারা গেছেন।  যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ওপেকের নিষেধাজ্ঞার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন তিনি। এ নিষেধাজ্ঞার ফলশ্রুতিতেই ১৯৭৩ সালে পশ্চিমা অর্থনীতিগুলোকে মহামন্দার বিপর্যয়কর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়।  আজ মঙ্গলবার সৌদি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, ৯০ বছর বয়সী ইয়ামানি মারা গেছেন।

ইয়ামানি ১৯৬২ সালে সৌদি আরবের তেলমন্ত্রী হন। রাজপরিবারের বাইরে কাউকে এমন প্রভাবশালী পদে বসানোর ঘটনা বিরল। তিনি প্রায় ২৫ বছর তার দায়িত্বকালে জ্বালানি তেলের পাওয়ার হাউস হিসেবে সৌদি আরবের উত্থানকে সামনে এগিয়ে নেন।

১৯৭০-এর দশকেই ইয়ামানি আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন।  ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পরে তেল নিষেধাজ্ঞার কারণে পশ্চিমের বিরাগভাজন হন।  পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক-এর আরব সদস্যরা ইসরায়েলকে সমর্থনের শাস্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য শিল্পোন্নত দেশগুলোকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩ ডলার থেকে বেড়ে ১২ ডলারে উঠে যায়।  যুক্তরাষ্ট্র তখন পেট্রল রেশন চালু করতে বাধ্য হয় এবং দেশব্যাপী গাড়ির গতিসীমা ৫৫ মাইলে সীমিত করে।

সেই সঙ্কটের বিষয়ে ইয়ামানী ২০১০ সালে সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আরব রাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে পশ্চিমের ওপর তেল নিষেধাজ্ঞার অর্থ ছিল এবং আমি এর পেছনে ছিলাম, অর্থনীতির ক্ষতি করা নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই ছিল লক্ষ্য, যে এখানে ফিলিস্তিন ও ইসারেয়েলের মধ্যে একটি সমস্যা চলছে। নিষেধাজ্ঞার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যটি ছিল ইসরায়েলকে অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চল থেকে সরে যেতে বাধ্য করা।

ইয়ামানি বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, ওপেকের সদস্যরা লোভ সংবরণ করতে পারেননি।  তারা টাকা কামানোকেই ভালোবাসেন। এ কারণে যতো দ্রুত সম্ভব দাম বাড়িয়ে দেন এবং এর জন্য তারা মূল্যও দিয়েছেন।

সাবেক এই তেলমন্ত্রী সিএনএনকে বলেন, ওই নিষেধাজ্ঞার জন্য মোটেও কোনো খেদ নেই তার।  তবে ওপেকের পরবর্তী সময়ে দাম নির্ধারণের প্রক্রিয়া ও প্রচেষ্টা নিয়ে তার যথেষ্ট সন্দেহ ছিল।

সূত্র: সিএনএন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন