দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুট

ঘন কুয়াশায় ৮ দিনে ৬৩ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রাজবাড়ী

ঘন কুয়াশার কারণে গত আটদিনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট রাজবাড়ী মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ৬৩ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ফেরি পারাপার। চিত্র এখন প্রায় প্রতিদিনেরই। সর্বশেষ শনিবার রাত থেকে গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় বন্ধ ছিল রুটে ফেরি চলাচল। এতে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হয় হাজার হাজার মানুষ।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত থেকে গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া উভয় পাড়েই শত শত যাত্রীবাহী গাড়ি ট্রাক আটকে পড়ে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগে চরমে ওঠে। আর পণ্যবাহী কোনো কোনো ট্রাক তো তিন-চারদিন ধরে ঘাটে আটকা পড়ে ছিল!

রুটে গত সপ্তাহের রোববার ১০ ঘণ্টা, সোমবার ১১, মঙ্গলবার , বুধবার , বৃহস্পতিবার , শুক্রবার শনিবার ঘণ্টা বন্ধ ছিল ফেরি পারাপার। সর্বশেষ বন্ধ ছিল ১২ ঘণ্টা।

গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আগের দিন রাত ১০টা থেকে গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা খুলনা মহাসড়কের অন্তত ছয় কিলোমিটার এলাকায় পারাপারের অপেক্ষায় আটকে ছিল যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার পণ্যবাহী ট্রাকসহ অন্তত ৮০০ ছোটবড় যানবাহন।

এদিকে প্রায় কোটি টাকা খরচ করে ২০১৪ সালে নৌরুটে চলাচলকারী খানজাহান আলী, শাহ আলী, কেরামত আলী, ভাষা শহীদ বরকত কে-টাইপ ফেরি কপোতী, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন, বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, শাহ আমানত শাহ পরান ফেরিতে ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট সংযোজন করা হয়। ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট সংযোজনের পর থেকে লাইটগুলো বিকল থাকায় কোনোক্রমেই নৌরুটের ভোগান্তি কাটছে না।

গতকাল সকালে দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে থাকা যশোর থেকে আসা ট্রাকচালক আব্দুল হালিম বলেন, কুয়াশার কারণে ফেরি বন্ধ। গত বুধবার যশোর থেকে রওনা হয়ে ওইদিনই রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ মোড়ে আসি, এরপর পুলিশ সদস্যরা সেখানে আটকে রাখেন। তিনদিনে যানজট ঠেলতে ঠেলতে ঘাটের কাছাকাছি এসেছি। হয়তো বিকাল পর্যন্ত ফেরিতে উঠতে পারব।

গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে থাকা ট্রাকচালক করিম শেখ বলেন, আমি গত বৃহস্পতিবার এসেছি। গোয়ালন্দ মোড়ে যানজটে আটকে আছি। এর মধ্যে ঢাকা থেকে মালিক বারে বারে ফোন দিচ্ছে। এছাড়া গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় একটি ফাঁকা জায়গায় আটকে থেকে ছেঁচড়া চোরের ভয়ে রাত জেগে পাহারা দিতে হয়েছে ট্রাকের মালপত্র।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি বণিক বার্তাকে বলেন, ফেরিতে যে লাইটগুলো স্থাপন করা হয়েছিল, সেগুলোর ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমরা বলেছি। ওই বিভাগটি বিআইডব্লিউটিসির প্রকৌশল বিভাগ দেখাশোনা করে। আমরা শুধু ফেরি পরিচালনা করি। তবে গত এক সপ্তাহে কুয়াশার কারণে ঘাট সামাল দিতে আমাদের বেগ পেতে হয়েছে। কুয়াশা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এখানে কারো হাত নেই। কুয়াশা কেটে গেলে নৌরুটের ১৬টি ফেরি দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী বাস পচনশীল ট্রাকগুলো পারাপার করা হচ্ছে।

বণিক বার্তার মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ঘন কুয়াশায় শনিবার রাত থেকে আটকে থাকা শত শত যানবাহন গতকাল দুপুর পর্যন্ত ঘাটেই আটকে ছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন