ঢাকায় নবনিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী জানিয়েছেন, দেশটির স্থানীয় রফতানিকারকদের বাংলাদেশে ২০ হাজার টন পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। আবহাওয়ার উন্নতি হলে এ রফতানির পরিমাণ আরো বাড়বে। এছাড়া মাহিন্দ্রাসহ ভারতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করে স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি ও সংযোজনের পাশাপাশি খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরিতেও বিনিয়োগ করতে পারে, সে বিষয়েও উদ্যোগ নেয়া হবে।
সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক এমপির সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাত্কালে বিক্রম দোরাইস্বামী এ কথা জানান। সাক্ষাত্কালে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভারতের কৃষি, কৃষি যন্ত্রপাতি, কৃৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ, বীজ প্রযুক্তি এবং দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় কৃষি সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কৃষি এখন যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকীকরণের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি সরকার প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রচুর কৃষি যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে ভারতের কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের কারখানা স্থাপন করে স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি ও সংযোজন এবং খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পারে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু দেশ। দুই দেশের গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের এ সম্পর্ক অটুট থাকবে। ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি পাবে। কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতে বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়ে আছে। আর ভারত এক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে আছে। এসব ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী খাতসংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ, বীজ প্রযুক্তি, বিটি কটন, ভুট্টা, কাজুবাদামসহ উন্নত জাতের চারা সরবরাহ, দুগ্ধ ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন।
জবাবে এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাই অর্জন করেনি, বরং অনেক ক্ষেত্রে এখন খাদ্যপণ্য রফতানিও করতে পারে। মাহিন্দ্রাসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশে কৃষি যন্ত্রপাতি স্থানীয়ভাবে তৈরি, অ্যাসেম্বল এবং খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরির বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।
এ সময় বাংলাদেশে ভারতীয় পেঁয়াজ রফতানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতের মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে বন্যা এবং অতিবৃষ্টির কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে। এ কারণে ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছে। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে ২০ হাজার টন পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দিয়েছে ভারত। আবহাওয়ার উন্নতি হলে এ রফতানির পরিমাণ আরো বাড়বে।