মহামারীতে ঐতিহাসিক শহর থেকে ছিটকে গেল মোটরগাড়ি

বণিক বার্তা ডেস্ক

সতেরো শতকের ঐতিহাসিক হলিরোড প্যালেসের সামনের প্রাত্যহিক কিছু দৃশ্য জুলাই থেকে আর দেখা যাচ্ছে না। এখানে লাইন ধরে ট্যাক্সি ট্যুরিস্ট বাসগুলো পার্ক করা থাকত।

এডিনবরার সিটি কাউন্সিল ভোট দিয়েছে পুরনো শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম সাজানো ভিক্টোরিয়া এবং কোকবার্ন স্ট্রিটের ছোট গলিগুলো কেবল পথচারীদের চলাচলের জন্য বরাদ্দের জন্য। পরিবর্তনটির উদ্দেশ্য ছিল করোনাভাইরাস মহামারীর সময় সামাজিক দূরত্বকে উৎসাহিত করা। পাশাপাশি রেস্টুরেন্টগুলোকে আউটডোর ডাইনিংয়ের জন্য আরো বেশি জায়গা করে দেয়া। অবশ্য এর বাইরে আরেকটি বিষয় হচ্ছে, এটি এডিনবরার নতুন সিটি সেন্টার ট্রান্সফরমেশন, পরিকল্পনার উচ্চাভিলাষী প্রতীকও। যেখানে রয়েছে ২০২২ সালের মধ্যে কয়েক মাইলের ট্রামলাইন, সুরক্ষিত বাইক লাইন এবং হাঁটার রাস্তা রাখার প্রত্যাশাও।

মহামারীকালে একাধিক শহুরে এলাকা যানবাহন চলাচলের পথগুলোকে পথচারীদের জন্য পুনর্গঠিত করেছে। এডিনবরাসহ ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন শহর স্লো ট্রাফিককে অগ্রাধিকার দিয়েছে দর্শনার্থীদের অতিরিক্ত ভিড় এড়ানোর জন্য। ১৯৯৫ সালে এডিনবরার ওল্ড অ্যান্ড টাউন জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক বিভাগ ইউনেস্কোর বিশ্বঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত হয়। যা কিনা শহরটিতে বছরে পাঁচ মিলিয়ন দর্শনার্থী নিয়ে আসার কারণ। এডিনবরা ফেস্টিবল ফ্রিঙ্গে একাই নিয়ে আসে দুই মিলিয়ন মানুষ। যা কিনা ২০২০ সালে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধরনের জনপ্রিয়তা শহরটিতে প্রাণশক্তি অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসে।

যে কারণে মানুষের আগমন, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন এডিনবরার পুরনো অংশটিকে দূষণ অতিরিক্ত ট্রাফিকের ঝুঁকিতেও ফেলে দেয়। এডিনবরার ট্যুরিস্ট গাইড রবার্ট হাউয়ি বলেন, ওল্ড টাউন থাকার জন্য একটু অন্য রকম জায়গা। এখানে দুধ কেনার চেয়ে কিল্ট (মেয়েদের এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী পোশাক) কেনা সহজ।

এখানে পথচারীদের জন্য জোন তৈরির পেছনে স্থানীয় চরিত্রগুলোকে সংরক্ষণ করাও একটি উদ্দেশ্য। এডিনবরা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের মুখপাত্র নিকোলাস হোথাম বলেন, ওল্ড টাউনের মধ্য দিয়ে বিপুল পরিমাণে গাড়ি চলাচল করার কারণে অযাচিত দূষণের জন্ম দেয় এবং দেখার ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে।

অবশ্য মোটরচালিত যান নিষিদ্ধ করার বিষয়টি অতি দর্শনার্থী সম্পন্ন ইউনেস্কোর স্থানগুলোর জন্য নতুন নয়। ভেনিসে কেবল নৌকায় বা হেঁটে যাওয়া যায়। এছাড়া আরো কয়েকটি শহর নীতিতে চলে। কিন্তু এর পরও সেই শহরগুলোতে দর্শনার্থীর চাপ কমেনি। তবে ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে কার নিষিদ্ধ করে নানা ধরনের সুফলও মিলেছে।

তবে মহামারীজনিত চ্যালেঞ্জগুলো শহর এবং তার অধিবাসীদের সুযোগ দিয়েছে আরো সতেজভাবে তাদের ইউনেস্কো স্বীকৃত অঞ্চলটিকে অবলোকন করার। যেখানে কোনো উবার বা মোটরযানের প্রয়োজন হয় না।

দ্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন