বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বগুড়া জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের সুপারিশ বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়। কমিটির পক্ষ থেকে এ সুপারিশের ভিত্তিতে স্কুল ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভায় শিক্ষকদের চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত বগুড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুম আলী বেগ সভায় উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হলেন ওই স্কুলের বাংলা বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আবদুল মোত্তালিব।
জানা যায়, সম্প্রতি বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের প্রাক্তন এক ছাত্রী ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবদুল মোত্তালিবের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন। এতে তিনি ২১ আগস্ট রাতে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশ্লীল প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ করেন ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পরে শিক্ষক ফোনে হুমকি ও অশ্লীল ছবি বানিয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া ও বাড়াবাড়ি করলে ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দেন।
অন্যদিকে কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে নিজের বাসায় নেয়ার জন্য টানাহেঁচড়া করার অভিযোগ রয়েছে। এজন্য জানুয়ারিতে কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। কিন্তু এর পর থেকেই অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখান। এ দুটি ঘটনা জানাজানি হলে কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।
বগুড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুম আলী বেগ জানান, তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। তদন্ত শেষে কমিটি দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের সুপারিশ করে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। গত বৃহস্পতিবার পরিচালনা পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ওই দুই শিক্ষককে চূড়ান্ত বরখাস্ত বা চাকরিচ্যুত করার লিখিত সুপারিশ বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।