অবতরণ ফি নিয়ে দ্বৈতনীতি, মোংলা বন্দরে আসছে না সিরামিকের কাঁচামাল

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, খুলনা

খুলনা বিভাগসহ দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বিভিন্ন শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেও নির্মাণ কাজের জন্য অন্যতম উপাদান সিরামিক কারখানার উন্নয়ন বাধাগ্রহস্ত হচ্ছে। এতে খুলনা অঞ্চলে সিরামিকের দামও বেশী পড়ছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সিরামিকের কাঁচামালের উপর থেকে ল্যান্ডিং চার্জ মওকুফ বা কমানো হলে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আরও বেশী কাঁচামাল আমদানি করা সম্ভব হবে। এতে এই অঞ্চলের অর্থনীতির চাকার আরও বেশী সচল হবে। দেশের দুই প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের দ্বৈত নীতির কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন এই অঞ্চলের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। তারা চট্টগ্রাম বন্দরের মতো মোংলা বন্দরের অবতরণ ফি (ল্যান্ডিং চার্জ) মওকুফের দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, খুলনা অঞ্চলে বিশেষ করে খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ ও বাগেরহাটে দুটি সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে। তাদের বিদেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামাল মোংলা বন্দরের পরিবর্তে খালাস করতে হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। সেখান থেকে আবার সড়ক পথে কাঁচামাল আনতে হয় কারখানায়। যা অনেক ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোংলা বন্দরে যদি কোন ল্যান্ডিং চার্জ না নেয়া হতো তাহলে এই বন্দরের মাধ্যমেই সমস্ত কাঁচামাল আনা সম্ভব ছিলো। এতে করে মোংলা বন্দরের আরও বেশী জাহাজ আসতো। আর এতে করে মোংলা বন্দরের গতিশীলতা আরও বৃদ্ধি পেতো।

মোংলা বন্দরে সিরামিকের কাঁচামালের জন্য টনপ্রতি নেয়া হচ্ছে ২৫০ টাকা। একই সাথে ১৫ ভাগ ভ্যাট। সব মিলিয়ে মোংলা বন্দরে এক টন মাল আসলে একজন আমদানিকারককে গুণতে হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা।

খুলনার স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ম্যাক্স শিপিং-এর স্বত্ত্বাধিকারী কামরুল ইসলাম বলেন, মোংলা বন্দরে ল্যান্ডিং চার্জ মওকুফ করা হলে এখানে জাহাজের আগমন আর বেশী হতো। বার্জ মালিকসহ এই কাজের সাথে জড়িতরা উপকৃত হতো। খুলনা অঞ্চলের ঘাটগুলো থেকে আরও বেশী রাজস্ব আদায় হতো। রেলওয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পণ্য পরিবহন হতো এবং রেলওয়েও লাভবান হতো। কিন্তু জাহাজ কম আসায় তা হচ্ছে না।

খুলনা চেম্বারের সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেন, এই বিষয়ে যদি কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করে তাহলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলনে, মোংলা বন্দর সৃষ্টির পর থেকেই ল্যান্ডিং চার্জ চলমান আছে। এই আয় থেকে বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও পেনশন দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বন্দররে সাথে মোংলা বন্দররে তুলনা করলে হবে না, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতি মাসে ৩০০টি জাহাজ আসে, সেখানে মোংলা বন্দরে আসে মাত্র ৬০ থেকে ৭০টি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন