উচ্চ আদালতের অনুমোদন: মেঘনা এনার্জিকে একীভূত করেছে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

এ বছরের ২২ জুলাই উচ্চ আদালতের কাছ থেকে মেঘনা এনার্জি লিমিটেডকে একীভূতকরণের অনুমোদন পেয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড। উচ্চ আদালতের অনুমোদন পাওয়ার পর গতকাল থেকে হাইডেলবার্গের সঙ্গে মেঘনা এনার্জির একীভূতকরণ কার্যকর হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

এর আগে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতের কাছে মেঘনা এনার্জি একীভূতকরণ স্কিম অনুমোদনের আবেদন করেছিল হাইডেলবার্গ সিমেন্ট। উচ্চ আদালত থেকে বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) একীভূতকরণ স্কিমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইজিএমে একীভূতকরণ স্কিমে শেয়ারহোল্ডার অনুমোদন নেয় হাইডেলবার্গ। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে মেঘনা এনার্জি লিমিটেডকে একীভূতকরণের খসড়া স্কিমে অনুমোদন দেয় হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। মেঘনা এনার্জির ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার প্রিমিয়ামসহ ৯১ কোটি ৭ লাখ টাকায় কিনে নিতে হাইডেলবার্গের প্রস্তাবে সম্মতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মেঘনা এনার্জির ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৪৫৭টি বা ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার ১০০ টাকা অভিহিত মূল্য ও ১২৪ টাকা ৫২ পয়সা প্রিমিয়ামে কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। উল্লিখিত শেয়ারের দাম হিসেবে মোট ৯১ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার ২২০ টাকা পরিশোধ করে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট কোম্পানিটি।

বিদ্যুকেন্দ্রটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হওয়ায় এবং এর মূল্য বিদেশী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানোর প্রয়াজনীয়তা উদ্ভুত হওয়ায় একীভূতকরণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে হাইডেলবার্গের অথোরাইজড ডিলার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে চিঠি দিয়ে নির্ধারিত মূল্য অনুমোদন করার কথা জানানো হয়।

ব্লুমবার্গের তথ্যানুসারে, মেঘনা এনার্জি লিমিটেড বাংলাদেশে নিবন্ধিত একটি ছোট আকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। হাইডেলবার্গ সিমেন্ট এজির সাবসিডিয়ারি হিসেবে তারা বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য মেঘনা এনার্জিে একটি ছোট আকারের বিদ্যুৎকেন্দ্র (এসপিপি) রয়েছে।

সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২০ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) হাইডেলবার্গ সিমেন্টের সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৫৪ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ২ টাকা ৬৯ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৯ টাকা ৩৪ পয়সা।

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য হাইডেলবার্গ সিমেন্ট শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ৩০ পয়সা। এর আগের বছরে যেখানে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ১৪ টাকা ৩৩ পয়সা। 

১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫৬ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৩৪৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। মোট শেয়ারের ৬০ দশমিক ৬৭ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ২৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ১ দশমিক ১১ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ১২ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন