ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে ভরা মৌসুমেও দেখা মিলছে না ইলিশের। অন্যান্য বছর এ সময়ে এলাকার মাছের বাজারে রুপালি ইলিশের ছড়াছড়ি থাকলেও এবারের চিত্র ভিন্ন।
মাছ শিকারের আশায় প্রতিদিন জেলেরা জাল, ট্রলার ও নৌকাসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে নেমে পড়েন সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে। কিন্তু ইলিশ না পেয়ে হতাশ তারা। ইলিশের মৌসুমেও ইলিশ ধরতে না পারায় দুর্দিনে পড়েছেন জেলেরা।
সুগন্ধা ও বিষখালীর জলসীমায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন শত শত জেলে। তবে এ বছর ভরা ইলিশের মৌসুম শুরু হলেও জালে মাছ ধরা পড়ছে না বললেই চলে। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। মাঝে মাঝে দেখা মিললেও তাতে নৌকার খরচ ওঠানোই সম্ভব হয় না। জেলেদের কাছে টাকা বিনিয়োগ করে বিপাকে আড়তদাররাও। অন্যদিকে পরিস্থিতিতে মহাজনের পাওনা টাকা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় জেলেরা।
ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা বলছেন, করোনার কারণে প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবে নির্বিচারে জাটকা নিধনে কমেছে ইলিশের উৎপাদন। তবে শিগগিরই নদীতে ইলিশ মিলবে বলে মনে করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। অল্প দিনের মধ্যে সাগর থেকে ইলিশ উজানের দিকে ওঠা শুরু করবে, তখন নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশের দেখা মিলবে।
সুগন্ধা ও বিষখালীর বেশ কয়েকজন জেলে জানান, জেলেরা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল কিনে নদীতে নেমেছেন। কিন্তু সারা দিন জাল ফেলেও মাছ না পাওয়ায় তারা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। হতাশায় এখন অনেক জেলেই নদীতে যাচ্ছেন না, নদীর তীরে নৌকায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। বেশির ভাগ জেলে আবার ব্যাংক ও এনজিও ঋণের কিস্তির ভয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন না।
ঝালকাঠির বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারগুলোয় তেমন ইলিশ নেই। এদিকে নদীতে যে যৎসামান্য ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে, তার দাম সাধারণ ক্রেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ক্রেতারাও খুব একটা কিনছেন না ইলিশ।
বাজারে ইলিশ কিনতে আসা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। তবুও বাজারে খুব একটা ইলিশ মাছের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।
মাছ বিক্রেতারা জানান, আগের মতো এখন আর ইলিশ বাজারে উঠছে না। বাজারে ইলিশ কম, তাই দামও বেশি।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইলিশের প্রজনন মৌসুম পাল্টে গেছে। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর যে ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে, তা দিয়েই আমাদের চলতি বছরের চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে।