আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে দায়িত্ব গ্রহণের একদিনের মাথাতেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত বাতিল করবেন। গত মে মাসে ডব্লিউএইচও থেকে বেরিয়ে আসার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেও মঙ্গলবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করেন ট্রাম্প। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।
নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর সময় ডব্লিউএইচও চীনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এ রকম অভিযোগ করে আসছিলেন ট্রাম্প। ডব্লিউএইচও থেকে আনুষ্ঠানিক প্রত্যাহার কার্যকর হতে আরো এক বছর লেগে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে ১০ শতাংশীয় পয়েন্ট নিয়ে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী বাইডেন। মহামারী ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় বর্তমান সরকারের সক্ষমতা নিয়ে অনেক ভোটারই সন্দিহান।
মঙ্গলবার রাতে এক টুইটে বাইডেন জানান, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে কাজ করতে অধিকতর সক্ষম তিনি।
তিনি লেখেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম দিনেই আমি ডব্লিউএইচওতে পুনরায় যোগ দেব এবং বিশ্ব মঞ্চে আমাদের নেতৃত্ব পুনঃস্থাপন করব।
ডব্লিউএইচওর সঙ্গে ট্রাম্প যে সম্পর্কের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা ২০২১ সালের ৬ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আনুষ্ঠানিক নোটিফিকেশন পাওয়ার পর জাতিসংঘের তরফ থেকে মঙ্গলবার এ কথা জানানো হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, তা কার্যকর করার আগে এক বছরের নোটিস দিতে হয় এবং জেনেভাভিত্তিক এ বিশ্ব সংস্থাকে যে চাঁদা দেশটির দেয়ার কথা, তা এ সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
ডব্লিউএইচও যেসব দেশের টাকায় চলে, তার মধ্যে এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের চাঁদার পরিমাণই এতদিন ছিল সবচেয়ে বেশি।
কেবল ২০১৯ সালেই যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া তহবিলের পরিমাণ ছিল ৪০ কোটি ডলারের বেশি, যা ডব্লিউএইচওর মোট বাজেটের ১৫ শতাংশের মতো।
ডব্লিউএইচওর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সেই চাঁদা বাবদ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এখনো ২০ কোটি ডলারের বেশি পাওনা রয়েছে জাতিসংঘের এ সংস্থার।
নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে চীনের সঙ্গে টানাপড়েনের জেরে যুক্তরাষ্ট্র এখন ডব্লিউএইচওর সঙ্গে ৭০ বছরের সম্পর্কের অবসান ঘটাতে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের এ সংস্থাটির বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি ট্রাম্প বলেছিলেন, চীনে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর সংস্থাটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার তথ্য ‘গোপন করেছিল’। ডব্লিউএইচওকে ‘চীন ঘেঁষা’
আখ্যায়িত করে এ বিশ্ব সংস্থাকে জবাবদিহিতায় আনারও দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।
ট্রাম্পের অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাডহ্যানম বলেন, প্রতিটি দেশের সঙ্গেই তারা কাজ করেন। পক্ষপাতের সুযোগ তাদের নেই।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছিলেন, এখন ডব্লিউএইচওর তহবিল বন্ধের সময় নয়। এ সংকট মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।