উন্নয়ন না হলে করোনায় দেশে দুর্ভিক্ষ হতো—ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এক দশকের অধিক সময় ধরে শেখ হাসিনা যদি দেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন না করতেন, তাহলে এই প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হতো। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনস্থ সরকারি বাসভবন থেকে এক ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি ২০০৯-এর পর দেশে ব্যাপকভাবে বিদ্যুৎ জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধি না করতেন, তাহলে এই প্যানডেমিকে দেশের মানুষ বিদ্যুিবহীন দুঃসহ পরিস্থিতি কীভাবে সহ্য করত আর হাসপাতালগুলো কীভাবে চলতসেটি আমরা চিন্তাও করতে পারছি না।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্যরা বাজেট প্রত্যাখ্যান করার নামে সংসদ ভবনের সামনে মহান সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত বাজেটের কপি ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। এটি মহান সংসদের প্রতি চরম অবমাননা। এটি তাদের শপথ ভঙ্গেরও শামিল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। জাতির ক্রান্তিকালে তারা দায়িত্বশীল আচরণ করেননি। তারা চেয়েছিলেন, সংসদ যাতে কোনো বাজেট পাস না করে। বাজেট ছাড়া একটি রাষ্ট্র তারা দেখতে চেয়েছিলেন। তারা দেশে একটি হতাশাজনক অবস্থা দেখতে চেয়েছিলেন। আমরা মানুষের মধ্যে আশার আলোর সঞ্চার করতে পেরেছি, যা এই প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে অত্যন্ত প্রয়োজন।

মন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯-এর প্রভাবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে যে সাময়িক প্রয়োজন উদ্ভূত হয়েছে তা মেটানো এবং অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে যে ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টি হবে তা পুনরুদ্ধারের কৌশল বিবেচনায় নিয়ে বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের ১৭তম এবং বর্তমান মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেট। বাজেটে অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জীবন জীবিকা রক্ষার ওপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য, কৃষি, কর্মসৃজন সামাজিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের প্রয়াস আরো জোরদার করা হবে। আমাদের সরকার দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-৪১) অনুমোদন করেছে। পরিকল্পনার মাধ্যমে ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মানুষে মানুষে বৈষম্য দূরীকরণ শ্রমজীবী মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে বিধান করেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছর থেকে শেখ হাসিনার সরকার পাঁচ বছর মেয়াদি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে, যার মূল প্রতিপাদ্য হবে দারিদ্র্য আয়বৈষম্য কমিয়ে এনে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক করা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগামী অর্থবছরে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করার মাধ্যমে আমরা দারিদ্র্য বিমোচনের হার পূর্বের ধারায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব বলে বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্য খাতকে এবার সর্বাপেক্ষা অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে এবং করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ক্ষতিপূরণ ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে জনজীবনকে সুরক্ষার লক্ষ্যে ন্যাশনাল প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্ল্যান প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন শুরু করা হয়েছে। কভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় বর্তমানে হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়া কভিড-১৯ মোকাবেলায় জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেট বরাদ্দের দিক দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অবস্থান পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে, যা গত অর্থবছরে ছিল অষ্টম স্থানে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন