নেত্রকোনার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর বালু মহালে সীমানা নির্ধারণ ও বালু উত্তোলন নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
এ নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন ইজারাদাররা।
এ ব্যাপারে ২ নং বালু মহালের ইজারাদার মো. আলাল মিয়া, ৪ নং বালুঘাটের মো. এমদাদুল হক খান, ৫ নং ঘাটের মো. চাঁন মিয়া ১৩ জুন জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার দুর্গাপুরের তেরি বাজারঘাট ও শিবগঞ্জ বাজারঘাট হতে চৈতাটী পর্যন্ত বালু মহাল ইজারাপ্রাপ্ত হয়ে বালি উত্তোলন করছিলেন ইজারাদার মো. আলাল মিয়া।
এরই মধ্যে ১৩ জুন ১ নং বালু মহাল স্থানীয় সার্ভেয়ার বিভাজন করে দেন।
আগে থেকে নির্ধারিত ২ নং বালু মহালের ১৫০১ নং দাগের ভূমি নতুন করে ১ নং মহালের সঙ্গে সংযুক্ত করায় বিতর্ক দেখা দেয়।
এতে ১ নং বালু মহালের ইজারাদারের লোকজন ২ নং বালু মহালের ভেতরে প্রবেশ করে পূর্বনির্ধারিত সীমানা নির্ধারণী খুঁটি উপড়ে ফেলে বালি উত্তোলন শুরু করে।
এ বিষয়ে ২ নং ইজারাদারের পক্ষ থেকে তাদের একাধিকবার নিষেধ এবং স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে।
২ নং বালু মহালের ইজারাদার মো. আলাল মিয়া জানান, অভিযোগ দায়েরের পর বারবার জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিষয়টি নিয়ে সুরাহা চাইলে এত দিন পার হলেও তার কোনো সুরাহা পাইনি আমরা।
প্রশাসন কী কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে তা আমাদের জানা নেই।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সীমান্তের সোমেশ্বরী নদীর ১ নং বালু মহালের ইজারামূল্য নির্ধারিত হয় ২৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা, ২ নং মহালের ১২ কোটি ৪ লাখ টাকা, ৪ নং মহালের ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা ও ৫ নং বালু মহালের ইজারামূল্য ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা নির্ধারিত হয়।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুরের ১ নং বালু মহালের তদারককারী ফারুক আহম্মেদ তাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদেরকে ইউএনও এবং সার্ভেয়ার বালুঘাট বুঝিয়ে দিয়েছেন।
আমরা অন্যের মহালে প্রবেশ করছি না বা খুঁটি উপড়ে ফেলিনি।
উল্টো আমাদের মহাল থেকে বালি উঠিয়ে নৌকায় করে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই তিনঘাটের লোকজন আটকানোর চেষ্টা করে।
এ ব্যাপারে আমরাও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা খানম বলেন, বালু মহালের একে অন্যের সীমানায় প্রবেশ করে বালি উত্তোলনের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিষয়টি ইজারাদারদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক বালু মহাল স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমি উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
অন্যের বালু মহালে অবৈধভাবে কেউ প্রবেশ করে বালি উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।