বিনা মাশুলে রাজশাহীর আম পরিবহন কার্যক্রম উদ্বোধন

দেশব্যাপী ডাকঘরের বিশাল পরিবহন নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে বিনা ভাড়ায় প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদিত আম-লিচু ঢাকার পাইকারি বাজারে পৌঁছে দিচ্ছে ডাক অধিদপ্তর। আজ মঙ্গলবার থেকে এই  কর্মসূচির আওতায় রাজশাহী অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদিত আম পরিবহন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে এই সব মৌসুমী ফল রাজধানীর বিভিন্ন মেগাশপ ও পাইকারি বাজারে বিপণন করা হবে। বিক্রয়লব্ধ টাকা কোন মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই সংশ্লিষ্ট কৃষকের হাতে পৌঁছে যাবে। দেশব্যাপী ডাক পরিবহনে নিয়োজিত ঢাকা ফেরৎ গাড়ী সমূহে বিনা মাশুলে প্রান্তিক কৃষকের পণ্য পরিবহনে সরকারের বাড়তি কোন খরচেরও প্রয়োজন হবে না।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ঢাকার বেইলি রোডস্থ তার  সরকারি বাসভবন থেকে রাজশাহী জেলার পুঠিয়ায়, পুঠিয়া উপজেলা সম্মেলন কক্ষে এই উপলক্ষে  আয়োজিত অনুষ্ঠানটি টেলি কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন। রাজশাহী জেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজশাহীর ডেপুটি কমিশনা মো. হামিদুল হক এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব নূর-উর-রহমান এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএস ভদ্র রাজশাহীতে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে মধুপুর থেকে আনারস পরিবহনসহ চাহিদা ও গুরুত্ব বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই কার্যক্রম চালু করা হবে। করোনা সংকটকালে জনগণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সেবাসমূহ সহজতর করতে সরকার গত ৯ মে থেকে কৃষকবন্ধু ডাক সেবা চালু করেছে। 

এছাড়াও বিনা মাশুলে করোনা চিকিৎসা উপকরণ পিপিই ও কিট দেশব্যাপী সিভিল সার্জন কার্যালয়সমূহে পৌঁছানোসহ জনগণের দোরগোড়ায় নিরবচ্ছিন্ন ডাক সেবা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমান ডাক সেবা চালু করা হয় বলে মন্ত্রী ভিডিও বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করে তা পানির দামে বিক্রি করে। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়া তাদের অধিকার।’

কৃষকদের জন্য আগামী বাজেটে প্রণোদনা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানসহ সরকার ঘোষিত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর। এসবেরই ধারাবাহিকতায় কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাওয় নিশ্চিত করতে আমাদের এই উদ্যোগ। সরকারের এই উদ্যোগ প্রান্তিক কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় অবদান রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’

এসময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব নূর-উর-রহমান বলেন, প্রান্তিক কৃষকদের জন্য গৃহীত এই উদ্যোগ প্রান্তিক কৃষকের মুখে হাসি ফুটাবে, কৃষক উৎসাহিত হবে,  উৎপাদন বৃদ্ধিতে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করবে।

ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএস ভদ্র বলেন, কৃষক স্বার্থ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিভিন্ন  উদ্যোগ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার এর দিকনির্দেশনায় ডাক বিভাগ এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পেরে আনন্দিত। এই উদ্বোগ সফল করতে ডাক বিভাগ বদ্ধপরিকর।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক বলেন, বিনা মাশুলে প্রান্তিক কৃষকের আম পরিবহনে সরকারের এই উদ্যোগ এই অঞ্চলের প্রান্তিক আম চাষীদের জন্য  খুবই সহায়ক একটি কমসূচি।

মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, গত ৩১  মে থেকে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি থেকে বিনা ভাড়ায় লিচু পরিবহন চালু করা হয়। করোনার বৈশ্বিক ক্রান্তিকালে প্রান্তিক কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে ডাক  ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর  নির্দেশে গত ৯ মে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর এর ঝিটকা থেকে কৃষকবন্ধু নামে এই কর্মসূচিটি চালু করা হয়।

অনুষ্ঠানে পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু, ডাক অধিদপ্তরের পরিচালক অসিত কুমার শীল, রাজশাহী‘র পোস্টমাস্টার জেনারেল মোহাম্মদ শফিকুল আলম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহীর উপ-পরিচালক মো. শামসুল হক, পুঠিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়ালিউজ্জামান, রাজশাহীর ডিপিএমজি ওয়াহিদ-উজ-জামান, রাজশাহী জিপিও’র সি. পোস্টমাস্টার মো: আমিনুর রহমান, পুঠিয়ার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন্নাহার ভূইয়া, পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম এবং কৃষক প্রতিনিধি হিসেবে মো. নওশের উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন