ত্রাণ কার্যক্রম

উপকারভোগীদের তালিকা প্রকাশের কথা ভাবছে আ.লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রায় দুই মাস ধরেই সারা দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। এতে সংকটে পড়েছেন হতদরিদ্র, দরিদ্র নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের কষ্ট লাঘবে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শুরু থেকে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসছে। এই ত্রাণ বিতরণে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে দলীয় সরকারিভাবে ত্রাণে উপকারভোগীদের তালিকা প্রকাশের কথা ভাবছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাই দলের তৃণমূলের নেতাকর্মী স্থানীয় প্রশাসনের কাছে উপকারভোগীদের তালিকা চাওয়ার কথা ভাবছেন তারা।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণে নানা অভিযোগ উঠেছে। যাতে দলের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। কারণে ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য করোনাকালে উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়ন প্রকাশ করার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দাতাদের তালিকা তৈরি করা হবে। যদিও এই প্রণয়ন করা সময়সাপেক্ষ হবে। যারা ত্রাণ দিচ্ছে তাদের উৎসাহিত করতে আমাদের এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, দলীয়ভাবে সারা দেশে কী পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে তার হিসাব চেয়েছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সরকারি ত্রাণ কোথায় যাচ্ছে, কারা পাচ্ছেসেই খবর রাখতে দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। ত্রাণগ্রহীতাদের তালিকা প্রকাশ করা নিয়ে এক ধরনের অস্বস্তি দলের ভেতরেও আছে। কিন্তু ত্রাণ নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চলছে, তা খণ্ডাতেই ইচ্ছা না থাকলেও ত্রাণগ্রহীতাদের তালিকাও প্রকাশ করতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বণিক বার্তাকে বলেন, দলীয়ভাবে ত্রাণ বিতরণের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। এটি ছোট কাজ নয়, খুবই বড় কাজ। তালিকা করতে গিয়ে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেটা মোকাবেলা করেই তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। একটি স্বচ্ছ তালিকা প্রণয়নের পর দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দেয়া হবে।

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক বলেন, আমাদের এমপিরা ত্রাণ দিচ্ছেন তার একটা তালিকা রয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা পরিষদ, শহর আওয়ামী লীগ, থানা আওয়ামী লীগ, পৌরসভা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যে ত্রাণ দেয়া হয়েছে এবং হচ্ছে তার তালিকা রয়েছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ এখনো আমাদের কাছে তালিকা চায়নি। চাইলে আমরা দিয়ে দেব।

নেতা বলেন, কিছু ক্ষেত্রে হয়তো দ্বৈততা থাকতে পারে, সেটা অস্বাভাবিক কিছু না। আর কিছু ভুলত্রুটিও থাকতে পারে। তবে এবারের ত্রাণ বিতরণ দেশের জন্য একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমরা ত্রাণ সহায়তায় নেইএমন অপপ্রচারের জবাব দেয়া, দলের অ্যাকাউন্টিবিলিটি রক্ষা করা আমাদের ডাটাবেজে সংরক্ষণ করার প্রয়োজনে সারা দেশের হিসাব চাওয়া হয়েছে। তালিকা ভবিষ্যতেও কাজে লাগতে পারে।

দলীয় ত্রাণ কার্যক্রম তদারকিতে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লকডাউন শেষ হলে আমরা সারা দেশে তদারকিতে নামব। ঢাকায় দু-একদিনের মধ্যে শুরু করব। এর মধ্য দিয়ে দলীয়ভাবে ত্রাণ কার্যক্রম আরো জোরদার হবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলা নিয়ে বিএনপি যে অপপ্রচার করছে, এর জবাব দিতে আমরা অনেকগুলো পরিকল্পনা নিয়েছি।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় ইউনিয়নভিত্তিক কারা কারা ত্রাণ দিচ্ছেন তার একটা তালিকা তৈরি করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি আমি। আর বলেছি, প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে তালিকা বড় করে টাঙিয়ে দিতে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন