যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের
অভাবে কক্সবাজারে বিকল হয়ে গেছে তিনটি সরকারি স্পিডবোট। একই কারণে বিকল হতে বসেছে
আরো পাঁচটি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ,
উদ্ধার কার্যক্রম, অভিযান পরিচালনাসহ বিভিন্ন কাজে এ নৌযানগুলো ব্যবহার করার
কথা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্পিডবোটের ব্যবহার করা না গেলে এসব কার্যক্রমেও
জটিলতা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা
গেছে, কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটে পৌরসভা গণশৌচাগারের
পূর্ব পাশে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার দুটি
স্পিডবোট। বাঁকখালী-খুরুশকুল সংযোগ সেতুর পাশে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে
আরো একটি। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলে উদ্ধার কার্যক্রম, সতর্কতা জারি ও ত্রাণ বিতরণের জন্য এ তিনটি স্পিডবোট দেয়া
হয়েছিল। তবে তদারকির অভাবে কোটি টাকা দামের এ তিনটি স্পিডবোট বিকল হয়ে গেছে।
প্রায় একই সময় ধরে
কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শ্মশান গেটের উত্তর পাশে পড়ে আছে কক্সবাজার জেলা পুলিশের
চারটি স্পিডবোট। এর মধ্যে দুটি ভিআইপিদের যাতায়াত এবং বাকি দুটি অভিযান পরিচালনার
কাজে ব্যবহার করার কথা। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এ স্পিডবোটগুলো এখন বিকল হওয়ার
পথে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে উদ্ধার
অভিযান ও ত্রাণ বিতরণের জন্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কক্সবাজার জেলা
শাখার একটি স্পিডবোটও রয়েছে। দীর্ঘদিন অব্যবহূত থাকা ও দেখভালের অভাবে এ নৌযানটির
এক-তৃতীয়াংশই মাটির নিচে চাপা পড়ে গেছে।
সূত্র জানায়, একসময় কস্তুরাঘাট হয়ে বাঁকখালী নদীতে নৌযান চলাচল করত। ওই
সময় সরকারি-বেসরকারি স্পিডবোট কস্তুরাঘাটে নোঙর করে রাখা
হতো। তবে আট বছর ধরে ঘাটটি পরিত্যক্ত। পানি না থাকায় নৌযানও আসা-যাওয়া করে না।
তার পরও জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা শাখা, পুলিশ ও রেড ক্রিসেট
সোসাইটির মালিকানাধীন সরকারি আটটি স্পিডবোট ঘাট এলাকায় ফেলে রাখা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ
ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্পিডবোটগুলো অনেক
আগে নষ্ট হয়ে গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের স্পিডবোট
দেখভালের দায়িত্বে আছেন মানিক নামে একজন কনস্টেবল। তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে অভিযান ও ভিআইপিদের পারাপারের জন্য এগুলো ব্যবহার
হতো। তবে এখন সামান্য ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ত্রুটি সারিয়ে এগুলোকে বাঁকখালী নদীর ৬
নম্বর জেটিঘাট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।
যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের
অভাবে সরকারি সম্পদ নষ্ট হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। আমরা কক্সবাজারবাসী নামের একটি
সংগঠনের সমন্বয়ক নাজিম উদ্দিন বলেন,
সরকারি স্পিডবোট ফেলে রেখে
নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় কোনোমতেই কাম্য নয়।
কক্সবাজার চেম্বার অব
কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, এটি দুঃখজনক। এসব স্পিডবোট যদি কারো প্রয়োজনে না লাগে, তবে সেগুলো অন্য একটি সরকারি দপ্তরকে হস্তান্তর করা উচিত।
এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মাহাবুবুল হক বলেন, আমি এ অফিসে যোগদান করেছি
কয়েকদিন আগে। তাই এ বিষয়ে তেমন কিছু জানা নেই।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন বলেন,
দ্রুত স্পিডবোটগুলো সরিয়ে
ভালো জায়গায় নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।