দোষী সাব্যস্তের আগে গ্রেফতার না করার দাবি ইউপি চেয়ারম্যানদের

নিহাল হাসনাইন

প্রচলিত ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হলে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে থাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে এ আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে চান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানরা। মামলা হলেও আদালতে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের গ্রেফতার বা বরখাস্ত না করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতি। পাশাপাশি গ্রাম আদালতে দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় মোকদ্দমায় ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা ক্ষতিপূরণ আদায়ের ক্ষমতাও চেয়েছে তারা।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের ভাষ্য, তাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়, তার অধিকাংশই থাকে মিথ্যা। সেই মিথ্যা মামলায় চেয়ারম্যানরা গ্রেফতার হওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে থাকে। নিয়মিত সেবা প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হন ইউনিয়নবাসী। একটা পর্যায়ে কারাগারে থাকা অবস্থাতেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয় চেয়ারম্যানকে। অথচ দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে দেখা যায় অনেকেই নির্দোষ।

বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির আহ্বায়ক মো. বেলায়েত হোসেন বিল্লাল বণিক বার্তাকে বলেন, ফৌজদারি বিধিতে কোনো চেয়ারম্যানের নামে মামলা হলে বিচার চলাকালীন অবস্থাতেই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এখানে আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করার জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে। আমরা চাই চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে মামলা হলে বিচার শেষ হওয়ার আগে যেন তাকে গ্রেফতার বা বরখাস্ত করা না হয়।

এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এ সুপারিশ জমা দিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতি। এতে প্রশাসনিক ইউনিট আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন চাওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের ওপর ঊর্ধ্বতন মহলের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করা এবং ইউনিয়ন পরিষদকে গ্রামপুলিশ নিয়োগের এবং অপসারণের পূর্ণ ক্ষমতা প্রদানের সুপারিশও করা হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সম্মানী বৃদ্ধির বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে সুপারিশ। চেয়ারম্যানদের সম্মানী বৃদ্ধি করে ৩৫ হাজার ও মেম্বারদের ২০ হাজার টাকা করার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় অবস্থিত সব ধরনের হাটবাজার, জলমহাল, বালুমহাল, পাথরমহাল, সাইরাতমহাল ও ফেরিঘাট ইজারা প্রদানের ক্ষমতা এবং ইজারালব্ধ আয় ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব আয় হিসেবে প্রদান করার সুপারিশও করা হয়েছে। আয় বাড়াতে ভূমি উন্নয়ন কর ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ শতাংশে উন্নীত করে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের তহবিলে জমা প্রদান এবং জন্ম নিবন্ধন ও বিবাহ নিবন্ধন ফি ইউনিয়ন পরিষদে হস্তান্তর করা, অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সব বরাদ্দ মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের অনুকূলে প্রদান করার সুপারিশও করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, সুপারিশগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। ১২টি সুপারিশের সবগুলোই তো আর বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন