কলাপাড়ার লালুয়া খেয়াঘাট

বেহাল ঘাট ও সড়কে ভোগান্তিতে ছয় গ্রামের মানুষ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বরিশাল

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আন্ধারমানিক নদীতে লালুয়া খেয়াঘাটের দুই পারের গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা দীর্ঘদিন ধরে। এর মধ্যে লালুয়ার দিকের সড়কে ইট বিছানো হলেও সেটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বহু আগেই। অন্য পারে ধানখালীর চর নিশানাবাড়িয়ার ঘাটে আসার গর্তে পূর্ণ সড়কটি এখনো কাঁচা। তাছাড়া ঘাটের তেমন কোনো অবকাঠামো না থাকায় নৌকায় উঠতেও বেগ পেতে হচ্ছে যাত্রীদের। অবস্থায় চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে ঘাটটি ব্যবহার করতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের ছয় গ্রামের অন্তত আট হাজার মানুষকে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যেতে চর নিশানবাড়িয়া লালুয়ার মধ্যবর্তী খেয়াঘাট ব্যবহার করেন গোলবুনিয়া, চিংগড়িয়া, মাঝের হাওলা, ছোনখোলা মাছুয়াখালী চর নিশানবাড়িয়ার মানুষ। ঘাটটি ইজারা দেয়া হচ্ছে প্রায় ২০ বছর ধরে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ঘাটের দুই পাশের রাস্তা নির্মাণ বা মেরামতে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

সরেজমিন দেখা গেছে, খেয়াঘাটে প্রবেশের দুই পারের রাস্তাই ভাঙা। ছোট-বড় গর্ত রয়েছে অসংখ্য। অনেক স্থানেই সরে গেছে দুই পাশের মাটি। সরু রাস্তা দিয়ে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচলের উপায় নেই। কিছু মোটরসাইকেল চলছে ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া ঘাটের অবকাঠামো আছে নামমাত্র। যে জেটি রয়েছে, সেটির অবস্থাও বেহাল। ভাটার সময় সেখানে নৌকা ভিড়তে পারে না। আর জোয়ারের সময় নৌকায় মোটরসাইকেল তুলতে হয় কাদামাটি পেরিয়ে।

ঘাট রাস্তার বেহাল দশার কারণে খেয়া পার হতে গিতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে বেশি বিপাকে পড়ছে ইউসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নয়াপাড়া দাখিল মাদ্রাসা ছোনখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অন্য কোনো উপায় না থাকায় তারা ঘাট দিয়ে খেয়া পারাপার হচ্ছে ঝুঁকি নিয়েই।

গোলবুনিয়া, চিংগড়িয়া, মাঝের হাওলা ছোনখোলার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, তাদের প্রতিদিন ঘাট দিয়ে পারাপার হতে হয়। বছরের পর বছর ঘাটতি ইজারাও দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ঘাটটি ব্যবহারে সাধারণ মানুষের সুবিধার কথা ভাবছেন না সংশ্লিষ্টরা। এখন বেহাল ঘাট পথ দিয়ে সুস্থ মানুষের চলাচলও দায় হয়ে পড়েছে। তার ওপর কখনো রোগী পরিবহন করতে গেলে দুর্ভোগ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। বিশেষ করে বর্ষার সময় তাদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। অবস্থায় তারা যত দ্রুত সম্ভব ঘাটের অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি দুই পাশের রাস্তা মেরামতের দাবি করছেন।

লালুয়া ইউনিয়নের পারভেজ মিয়া বলেন, খেয়াঘাটের সড়কের দুই পাশের মাটি বহু আগেই সরে গেছে। বর্তমানে পথে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। এদিকে লালুয়া ইউসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বর্ষার সময় খেয়ায় উঠতে খুব কষ্ট হয়। অনেক সময়ই তারা পা পিছলে পড়ে যায়, ঘটে দুর্ঘটনা।

চলতি বছর লাখ ৮১ হাজার টাকায় শাহারিয়ার সবুজ নামে এক ব্যক্তিকে ঘাটটি ইজারা দিয়েছে উপজেলা পরিষদ। ঘাটের টোল আদায়কারী আল-আমিন বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে যাত্রীদের নৌকায় ওঠা-নামায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।

বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম রাকিবুল আহসান বলেন, ঘাটটির বেহাল দশার ব্যাপারে আমাকে কেউ জানায়নি। এছাড়া মাসিক মিটিংয়ে ইউপি চেয়ারম্যানও বিষয়টি জানাননি। তবে কেউ আবেদন করলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন